ডেস্ক নিউজ
সরকারের মেগা প্রকল্পের আওতায় ৫৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় লেনের ১২৫ কিমি করে ২৫০ কিমি সড়ক মেরামত ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এতে আগামী ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছেন সড়ক মেরামত সংশ্লিষ্টরা। কুমিল্লা সড়ক জোন সূত্র জানায়, ভারতের ইরকন কোম্পানি, চীনের সিনো হাইড্রো কোম্পানিসহ ১০টি দেশী -বিদেশী কোম্পানির মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ফেনীর ধুমঘাট পর্যন্ত উভয় লেনের ১২৫ কিমি করে ২৫০ কিমি সড়ক নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে সড়ক ও জনপথের নিকট হস্তান্তর করা হয়। সূত্র জানায়, ওই সময় থেকে অদ্যাবধি প্রায় সাড়ে ৪ বছরে দেশের লাইফ লাইন খ্যাত এ মহাসড়কে বড় ধরনের কোন মেরামত কাজ হয়নি। এতে সড়কে একদিকে ভারি যানবাহন চলাচল ও অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন অংশ দেবে ও ফুলে রাটিং সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া বৃষ্টিপাতে সময়মতো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় তৈরি হয় বড়বড় খানা-খন্দ। সূত্র জানায়, এমতাবস্থায় পারফর্মেন্স বেইজড অপারেশন ঢাকা-চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হইওয়ে প্রকল্পে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ফেনীর ধুমঘাট পর্যন্ত উভয় লেনের ২৫০ কিমি সড়কে মিডিয়ানের আবর্জনা অপসারণ সৌন্দর্য্য বর্ধন, ভাঙ্গাচোরা ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতসহ কার্পেটিংয়ের ৫শ’ ৫৬ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮৮৩ টাকা প্যাকেজের কাজ পায় আব্দুল মোমেন লিমিটেড ও স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। গত ২০২১ সালের ২৮ মার্র্চ কার্যাদেশ পেয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই বছরের এপ্রিল মাস থেকে সড়কে কাজ শুরু করে। প্রথমে সড়ক মিডিয়ানের ঘাস, আবর্জনা অপসারণ করে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চালানো হয়। এছাড়া সড়কে যানবাহন চলাচল স্বভাবিক রাখতে ওই বছরে রাস্তায় সৃষ্টি হওয়া খানা-খন্দ ভরাট করে ভাঙ্গাচোরা ও ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মেরামত কাজ চালানো হয়। পরবর্তীতে যে সকল অংশে দেবে ও ফুলে গেছে (রোড হাম্প ) সেসব স্থানে রাট কাটিং মেশিনের সাহায্যে কেটে সমান করা হয়। এরপর চূড়ান্তভাবে ৫০ মিলিমিটার পুুরু কার্পেটিং কাজ শুরু করা হয়। সড়কের কুমিল্লা জোনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুস হোসাইন সাকিব জানান, এ পর্যন্ত উভয়দিকে প্রায় ৫০ কিমি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও জানান, সড়কের অধিকতর টেকসইয়ের জন্য দেশর খ্যাতিমান প্রকৌশলীদের পরামর্শে দুবাই থেকে পলিমার মডিফাইড বিটুমিন আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা এ বিটুমিন পরীক্ষা করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড়িয়ে আনতে বেশ সময় লেগে যাওয়ায় কাজের কাক্সিক্ষত অগ্রগতি হয়নি। তারপরও সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় ঈদকে সামনে রেখে সরকারের এ মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ৪ বছরের এ প্রকল্পের কাজ আগামী ২০২৪ সালে পুরোপুরি শেষ হবে। তিনি আরও জানান, কাজ শেষ হওয়ার পরও পরবর্তী ৩ বছর মেয়াদের জন্য জরুরী ভিত্তিতে সড়কে যেকোন মেরামত ও সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য গাড়িসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি মজুদ রাখা হবে। কুমিল্লা সড়ক জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা জানান, টেকসই মেরামত কাজে সওজ’র পাশাপাশি বুয়েট ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা এ প্রকল্পের কাজের তদারকি করছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আসন্ন ঈদের আগে ও পরে মহাসড়কে কাজ বন্ধ রাখা হলেও জরুরী কাজের স্বার্থে সংশ্লিষ্টরা প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করবেন। তিনি এবারের ঈদ যাত্রায় কোন ভোগান্তি ছাড়াই ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতে ফিরতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।