ডেস্ক নিউজ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে বলছে, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সুশাসন বাংলাদেশে তাদের অন্যতম এজেন্ডা। আর এই লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন রকম চাপ প্রয়োগ করছে বাংলাদেশের ওপর। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে মানবাধিকার রিপোর্ট সেই রিপোর্টটিও বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগের একটি কৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আর সরকার এই চাপ মোকাবেলার জন্য একাধিক কৌশল এবং উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে যে সমস্ত পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশ নিচ্ছে বা নিতে যাচ্ছে সেগুলো হলো:
১. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা: সরকার ইতিমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করছে। সরকারের অন্তত দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তি বলছে যে, বাতিল নয় বরং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে সমস্ত আপত্তিকর বিষয় আছে সেগুলোকে সংশোধন করার একটা চিন্তা-ভাবনা সরকারের মধ্যে কাজ করছে এবং এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় আইনটি পুনঃপরীক্ষা করছে বলেও একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
২. গুম হওয়া ব্যক্তিদের সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে বিশেষ সেল: যে ৮৬ জন ব্যক্তির বিষয়ে গুমের অভিযোগ এসেছে তাদের সম্বন্ধে সঠিক তথ্য সংগ্রহ, খোঁজখবর নেওয়া এবং প্রয়োজনে তাদেরকে উদ্ধার করার ক্ষেত্রে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করবে বলেও সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এর ফলে গুম নিয়ে যে বিতর্ক সেই বিতর্কগুলো বন্ধ হবে বলেও সরকার ধারণা করছে।
৩. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে রাজনৈতিক উদ্যোগ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ আছেন তারাও সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসম্যান এবং প্রভাবশালীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবে এবং একটি সুসম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
৪. আগামী নির্বাচন নিয়ে সংলাপ: আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ একটি সংলাপ শুরু করবে এবং এই সংলাপটি খুব দ্রুতই করবে। সকল রাজনৈতিক দল যেন আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে একটা সমঝোতার চেষ্টা করবে বলেও জানা গেছে।
৫. বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর অবস্থান: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদী তৎপরতা এবং উগ্র মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন বাংলাদেশে দাপট দেখাতে না পারে সে জন্যই সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে যৌথভাবে কাজ করারও প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। কারণ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ দমন করতে হলে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ লাগবে। এই চিন্তা-ভাবনা থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ দমনে একটি সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়েও এগোবে।
এসবের মধ্যে দিয়ে দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।