ডেস্ক নিউজ
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে দল-মত নির্বিশেষে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শুধু ক্ষমতার রাজনীতি দিয়ে সাধারণ মানুষের কল্যাণ করা যায় না। বিভক্তির রাজনীতি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে সবাইকে এক হতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ সহজ হবে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের চতুর্থ বছরে সমকালকে এসব কথা বলেন মো. আবদুল হামিদ।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে কখনোই নীতি থেকে বিচ্যুত হইনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে রাজনীতির পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। জীবনে কোনোদিন রাজনীতির অপব্যবহার করিনি। মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করিনি। সে কারণেই মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি এবং মহান সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে আজ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। যদিও এখন আমি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তি, তবু মনে করি সবকিছুর মূলেই হচ্ছে সততা, জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, জাতি গঠনের মূল ভিত্তি হচ্ছে শিক্ষা। প্রত্যেক নাগরিককে সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে না পারলে আমরা কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারব না। তাই তিনি নাগরিকদের নিজের সন্তানদের প্রতি অধিক মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন প্রযুক্তির যুগ। তাই নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। দেশ থেকে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কমাতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রশ্নে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময় চেয়েছিলেন, এ দেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ এখনও অনেক বেশি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও সর্বোপরি বৈশ্বিক সার্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশকে আর কখনোই পেছনে তাকাতে হবে না।
রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবার রাজনীতিতে ফিরবেন কিনা- এমন প্রশ্নে মো. আবদুল হামিদ বলেন, অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম। পুরস্কার হিসেবে জীবনের সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ করেছি। আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। মেয়াদ শেষে যদি আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে বেঁচে থাকতে চাই। নিজে রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও জীবদ্দশায় কোনোদিন রাজনীতি-বিবর্জিত হয়ে থাকতে পারব না। কারণ, আমার রক্তে মিশে আছে রাজনীতির ঘ্রাণ। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংঘাতহীন রাজনীতির স্বপ্ন এবং ব্রত নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।