নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
৩২০ কোটি টাকার আম বিক্রির সম্ভবনা নিয়ে নাটোরে গাছ থেকে নিরাপদ আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। শনিবার বড়াইগ্রাম উপজেলার আহমেদপুরের বিভিন্ন বাগানে আম পাড়ার মাধ্য দিয়ে এই আম সংগ্রহ শুরু হয়। আমচাষী, বাগান মালিক ও আড়ৎদারা গত দুই বছর করোনার কারণে আম ব্যবসায় লোকসানে পড়েছিল। এবারও ঔষধের দাম বেশী হওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকসানের আশংকা তাদের। আর প্রশাসন নিরাপদ আম দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
নাটোরের প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই আমের চাষ হয়। এখানকার মানুষ কৃষি পন্যের আবাদের সাথে ফল চাষের দিকেও ঝুকে পড়ছে। প্রায় প্রতিবছরই নাটোরে আমের আবাদের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলায় এবার ৫ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। ৮০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে যার বাজার মূল্য প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। এই আম পাড়তে এখন চলছে বাগানে বাগানে ব্যাবসায়ীদের ব্যাস্ততা।
আম চাষীরা বলেন, গত দুই বছর করোনার কারনে তারা লোকসানে পড়েছিল। এবার গোপাল ভোগ আম পাড়া শুরু হয়েছে। এবার আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় আমের ফলন হয়েছে অনেক কম। গতবছরের তুলনাই এবার গাছে ফলন কম হয়েছে। এছাড়াও এবার আম বাগানে খরচ হয়েছে বেশী। বাজারে আমের দাম কেমন হবে তা এখনো বুঝতে পারছেন না।
বাগান মালিকরা বলেন, অন্যান্য বছর আমের বাগান এক বছরের জন্য বিক্রি করেছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকায়। এখন দুই তিন বছরের জন্য বিক্রি হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। প্রচন্ড খরার কারনে বাগানে ঔষধ দিতে হয়েছে বেশী। এতে করে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেকারনে লোকসানের সম্ভাবনা। ফরমালিন মুক্ত আম চাষ করার অঙ্গীকার নিয়ে তারা মানুষকে ভালো আম খায়াতে চান।
আড়ৎদার বলেন, এবার গোপাল ভোগ আম ১ হাজার টাকা থেকে ১২ শ টাকা প্রতিমন। এই আমের খরচের তুলনায় তা অনেক কম। ১৭ থেকে ১৮শ টাকায় বিক্রি করতে পারলে তারা লাভবান হতে পারবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার ৫ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এখান থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। বাজারে আমের দামও ভালো পাবেন বলে মনে করেন তিনি।
আম পাড়া উদ্বোধনী দিনে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, আম গাছ থেকে পাড়া সহ সারা দেশে বিক্রির জন্য যাতে কোন ধরনের অনিয়ম বা ব্যাবসায়ীদের হয়রানী হতে না হয় সেদিকে কঠোর নজরদারী করবে জেলা পুলিশ।
আর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানালেন, বিষ মুক্ত আম মানুষের কাছে পৌছে দিতে সকল প্রকার ব্যাবস্থা গ্রহন করছেন তারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ,পুলিশ প্রশাসন ও আড়ৎদ্র সহ ব্যাবসায়ীদের সাথে যৌথ সভা করে এলাকায় বিষ মুক্ত আম বাজারজাত করার প্রতিশ্রুতি দেন।