নিজস্ব প্রতিবেদক:
অর্থনীতি বিভাগের সচিব কাওছার আহমেদ এর নেতৃত্বে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদুতসহ উর্দ্ধতন ৯ জন কর্মকর্তা নাটোরের সিংড়ায় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃস্থানীয়দের সাথে চলনবিলের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছেন।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চলনবিল অধ্যুষিত সাঁতপুকুরিয়া মাদ্রাসা মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজকসূত্রে জানা গেছে, বন্যা, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হিসেবে আলোচিত ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’এর অর্ন্তভুক্ত একটি প্রকল্প চলনবিল উন্নয়ন প্রকল্প। চলনবিলের উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করছে নেদারল্যান্ডস সরকার। এরই মধ্যে উভয় সরকারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ৩ হাজার ১৪৫ বিলিয়ন টাকারও বেশি।
ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য এই মহাপরিকল্পনার প্রথম ধাপে অর্থাৎ ২০৩০ সাল নাগাদ বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে ৮০টি প্রকল্প। এর মধ্যে ৬৫টি ভৌত অবকাঠামো প্রকল্প এবং ১৫টি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, দক্ষতা ও গবেষণা বিষয়ক প্রকল্প রয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে চলনবিলকে যথাসম্ভব আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়া, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, কৃষি ও মৎস বিভাগের উন্নয়ন, যোগাযোগহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পর্যটন এলাকা গঠনসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত গ্রহনের জন্য এই সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
এসময় নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদুত এ্যানি ভেন লিওয়েন এবং উইলিয়াম, মার্কিন, থ্রোস, মরইস, সেন্ডার, বাসেলসহ ৯ জন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান প্রকল্পের ডেপুটি ডিরেক্টর মির্জা মহিউদ্দীন, সিনিয়র পলিসি এ্যাডভাইজার (নেদারল্যান্ডস) এ.কে.ওসমান হারুনী, নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের, সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান কামরান, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, ইটালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলামসহ সভায় উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও উপকারভোগীরা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, চলনবিলকে ডেল্টা প্ল্যানের অওতাভুক্ত করে দু’দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ চলনবিলকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে একশো বছরের পরিকল্পনায় ৮০টি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পানি ব্যবস্থাপনা, রেস্টুরেন্ট রেহাবিলিটেশন, পর্যটন, কৃষি শিল্পের মানোন্নয়ন, উন্নত স্যানিটেশন, ফিসল্যান্ডিং সেন্টার, খাল খনন, বনায়ন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
উল্লেখ্য, কয়েক ধাপে ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়ন করা হবে। ২০৩১ সাল নাগাদ থাকবে প্রথম ধাপ। ২০৩১ থেকে ২০৫০ সাল নাগাদ পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ, এবং এরপর তৃতীয় ধাপ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২১০০ সাল। পরিকল্পনা কমিশন ৫ বছর পর পর পুরো ডেল্টা প্ল্যানের তথ্য হালনাগাদ করবে বলেও সভায় জানানো হয়।