ডেস্ক নিউজ
এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ১ নম্বর ওয়ার্ডের খিলগাঁও এলাকার একটি বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে ৩ মাসের জেল দিয়েছে সংস্থাটির ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই অভিযানে আরও একটি বাড়ি সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়াও বাড়ির আঙিনা ও অভ্যন্তরে প্রচুর পরিমাণে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি ভবন মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ জুলাই) সংস্থাটির অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো এর তত্ত্বাবধানে করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান আশিক খিলগাঁও এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করেন।
অঞ্চল-২ এ অভিযানকালে আদালত মোট ৩৮টি ভবন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ৫০০/সি ও ৫০০/৪/সি হোল্ডিংস্থিত ২টি ভবনে এডিস মশার প্রচুর লার্ভা পাওয়া যায়। এ সময় আদালত ২ ভবন মালিককে ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড আরোপ এবং অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরবর্তীতে ৫০০/সি ভবনটির মালিক আরোপিত অর্থদণ্ড প্রদান করলেও ৫০০/৪/সি ভবনটির মালিক তা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আদালত পরিচালনাস্থলে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন। এ সময় আদালত ভবন মালিকের ভাগ্নে ও ভবনটির তত্ত্বাবধায়ক জৈনক সুলতানকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এছাড়াও অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিকট ৭০/সি হোল্ডিংস্থিত পার্শ্ববর্তী রোডে ‘বাতায়ন’ নামক একটি ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক নির্মাণাধীন ভবনে প্রচুর লার্ভা থাকার খবর আসে। পরে আদালত সেখানে গিয়ে জানতে পারেন যে, ভবনটির কার্যক্রম ও তদারকির সাথে সম্পৃক্ত লোকজন ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েক মিনিট আগে তড়িঘড়ি করে ভবনটির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে চলে যান। এ সময় আদালত ভবনটি সিলগালা করে দেন।
অভিযান প্রসঙ্গে অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো বলেন, জেল জরিমানা করে মানুষকে এডিস মশার প্রকোপ থেকে রক্ষা করা যাবে না। আমরা কাউকে জেল জরিমানা করতেও চাই না। কিন্তু কোনও মানুষ যখন ডেঙ্গু রোগের বিস্তার ঘটার সহায়ক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে, তখন আমরা বাধ্য হয়ে তাদের দণ্ড দেই।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর সচেতনতা একান্ত জরুরি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা নগরবাসীকে নিজ বাড়ির অভ্যন্তরে, আঙিনায় এবং আশপাশে যাতে স্বচ্ছ পানির আধার সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সচেতন হতে এবং সজাগ থাকতে অনুরোধ করছি। প্রয়োজনে প্রতিদিনকার জমা হওয়া স্বচ্ছ পানি ফেলে দিন এবং ডেঙ্গু রোগ থেকে নিজেও মুক্ত থাকুন, আশপাশের প্রতিবেশীদেরও ডেঙ্গু রোগ থেকে মুক্ত রাখুন।
পরবর্তীতে অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যান এবং সেখানে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ রোধে পুলিশ সদস্যদেরকে কাছে লিফলেট বিতরণ করেন এবং তাদের আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহবান জানান। এ সময় সেখানে পুলিশের অনেক সদস্য জড়ো হয়ে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও এদিন দক্ষিণ সিটির অন্যান্য আঞ্চলেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। সবমিলিয়ে মোট ৮৩টি বাসাবাড়ি, নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৬টি বাসাবাড়ি ও ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৬ মামলায় ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযানকালে অন্যান্যের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুল আলম, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. এনামুল হক আবুল, অঞ্চল-২ এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু সাদাত মোহাম্মদ সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।