ডেস্ক নিউজ
দেশে করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসায় আমদানি বেড়েছে। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেড়েছে আমদানি ব্যয়। গত ১২ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল ১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে অন্তত পাঁচ মাসের ব্যয় মেটানো যাবে। তবে এটা এ মুহূর্তে যথেষ্ট।
বিশ্ব অর্থনৈতিক সঙ্কটে শুধু বাংলাদেশ নয়, রিজার্ভে ধাক্কা লেগেছে দেশে দেশে। বিশ্বে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদেশী মুদ্রার মজুদ থাকে চীনে। সেই চীনের রিজার্ভ গত সাত মাসে ২০০ বিলিয়ন ডলার কমেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জাপানের রিজার্ভ ১০০ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে। তৃতীয় স্থানে সুইজারল্যান্ডের রিজার্ভ ৯৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আর পাশের দেশ ভারতের রিজার্ভ নেমে এসেছে ৫৭২ বিলিয়ন ডলারে। যা গত ২০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
পাকিস্তানের রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে এবং অর্থনৈতিক গভীর সঙ্কটে থাকা শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারের নিচে অবস্থান করছে। এদিকে ডলারের বিপরীতে অন্যান্য দেশের মুদ্রার মান যেই হারে কমছে তার তুলনায় বাংলাদেশের ‘টাকা’ অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে। গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ডলারের বিপরীতে তেলের দেশ ভেনিজুয়েলা ৯৯.১২ শতাংশ, জিম্বাবুইয়ে ৯৭.৬১ শতাংশ, লেবানন ৯২.২৪ শতাংশ, সিরিয়া ৭৭.২৬ শতাংশ, রাশিয়া ৬৬.৫৭ শতাংশ, ইরান ৫৮.২৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৫৪.৩০ শতাংশ, পাকিস্তান ৩২.২৪ শতাংশ ও ভারত ১৪ শতাংশ মুদ্রার দর হারিয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলতি অর্থবছর রিজার্ভে চাপ থাকবে ঠিকই কিন্তু এই সময়ে রেমিটেন্সের প্রবাহও বাড়তে পারে। আর আমদানি ব্যয়ও কমে আসবে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিও কমবে। এতে চলতি অর্থবছরের শেষার্ধে রিজার্ভের পরিমাণ কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। তখন প্রতি মাসে আমদানি ব্যয় হতো ৫৫০ কোটি ডলারের মতো। আর এ দিয়ে প্রায় ৯ মাসের আমদানি মেটানো সম্ভব ছিল। তবে গত অর্থবছরের শেষের দিকে রিজার্ভ নেমে আসে ৪২ বিলিয়ন ডলারে। আর এ সময়ে প্রতি মাসে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৭৫০ কোটি ডলারের বেশি।
চলতি অর্থবছরের শুরুতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (এসিইউ) দেনা পরিশোধ করার পর রিজার্ভ কমে ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, চলতি মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়বে। ফলে চলতি মাস শেষে রিজার্ভ আবার ৪ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়লে রিজার্ভও বাড়বে। সরকার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এর সুফলও কিছুটা মিলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক নিরাপদ মানদ- অনুযায়ী স্বাভাবিক সময়ে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। যদি খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয় তাহলে থাকতে হবে কমপক্ষে ৫ মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান। বিশ্বব্যাপী অপরিহার্য পণ্যের বাজারে অস্থিরতা থাকলে কমপক্ষে ৭ মাসের সমান আমদানি ব্যয়ের রিজার্ভ থাকতে হয়।
বাংলাদেশ বর্তমানে ব্যাপক পরিমাণে খাদ্য আমদানি করে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়-ব্যয়ে বড় ঘাটতি বিরাজ করছে। যা প্রতি মাসেই বাড়ছে। এসব বিবেচনায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও এখন সাত মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান থাকা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আমদানি ব্যয় নির্ভর করে পণ্যের আমদানির পরিমাণও আন্তর্জাতিক বাজারের দামের ওপর। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ায় ২০২০ সালে প্রতি মাসে গড়ে আমদানি ব্যয় হতো ৩৫০ কোটি ডলার। ২০২১ সালে তা বেড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার হয়েছে।
আর চলতি বছর তা আরও বেড়ে ৭৫০ কোটি থেকে ৭৯০ কোটি ডলারে উঠেছে। এতে তিন মাসের বা ৭ মাসের আমদানি ব্যয়ের রিজার্ভ রাখার পরিমাণও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত রীতি মেনে দীর্ঘদিন ধরে একই পদ্ধতিতে রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে রিজার্ভ বেশি দেখানোর সুযোগ নেই, যা আইএমএফকেও চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন পর্যন্ত রিজার্ভের লেভেল ঠিক আছে। রিজার্ভ যাতে না কমে, সে জন্য আমদানির রাশ টানতেই হবে। এ জন্য আমদানি অর্থায়নের সুদহার ও মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। এ ছাড়া আন্তঃব্যাংক ও খোলাবাজারের ডলারের রেটের পার্থক্য ২ টাকার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে প্রতিদিনই ৭ থেকে ১০ কোটি ডলার করে বিক্রি করা হচ্ছে। এরপরও বাজারে অনেক ডলার সঙ্কট রয়েছে। এতে বোঝা যায়, আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়েই এখন রিজার্ভ ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো নিয়মিত এলসি খুলতেও পারছে না।
এ অবস্থায় রেমিটেন্স বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।’ রফতানি আয় বাড়ানো এখন চ্যালেঞ্জিং। কেননা রফতানির বড় বাজার ইউরোপ ও আমেরিকা এখন মন্দায় আক্রান্ত। ফলে ওইসব দেশে রফতানি কমে যাবে। এদিকে আমদানি বেড়েই যাচ্ছে। এটি কমানো কঠিন। বেশি কমানো হলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এ গবর্নর। সালেহ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সঙ্কট মোকাবেলায় মুদ্রা পাচার ও রেমিটেন্সে হু-ি বন্ধ করাটা খুবই জরুরী। এছাড়া বৈদেশিক সংস্থাগুলো থেকে কম সুদের দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নেয়া যেতে পারে। স্বল্পমেয়াদী ঋণ নেয়া বন্ধ করতে হবে। স্বল্পমেয়াদী ঋণের কারণে সামনে আরও চাপ বাড়বে রিজার্ভে।’
রিজার্ভ কমছে দেশে দেশে ॥ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, বিশ্বে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদেশী মুদ্রার মজুদ থাকে চীনে। সেই চীনের রিজার্ভ গত সাত মাসে ২০০ বিলিয়ন ডলার কমে ৩ হাজার ২৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩ হাজার ৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। দ্বিতীয় স্থানে জাপানের রিজার্ভ ১০০ বিলিয়ন ডলার কমে ১ হাজার ৪০০ বিলিয়ন থেকে ১ হাজার ৩০০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। তৃতীয় স্থানের সুইজারল্যান্ডের রিজার্ভ ৯৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
আর পাশের দেশ ভারতের রিজার্ভ নেমে এসেছে ৫৭২ বিলিয়ন ডলারে। যা গত ২০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত ১৫ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে ৫৭২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেও ভারতের রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছিল। বর্তমানে পাকিস্তানের রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে থাকা শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারেরও কম।
বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ হিসেবে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মার্কিন ডলারকে বেছে নেয়। তবে দেশভেদে মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরো, চীনা ইউয়ান ও জাপানী ইয়েনে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ রাখা হয়। অবশ্য বিদেশী মুদ্রার পাশাপাশি ব্যাংক নোট, বন্ড, আমানত, ট্রেজারি বিল ও অন্যান্য সরকারী সিকিউরিটিজের মাধ্যমেও বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ রাখা হয়।
ডলারের বিপরীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার দর পতন ॥ জনহপকিন্স ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ স্টিভ হাঙ্কি সম্প্রতি গত দুই বছরে ডলারের বিপরীতে সবচেয়ে দর হারানো মুদ্রার একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা যায়, ২০২০-এর জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে জুলাইয়ের ২২ তারিখ পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে সবচেয়ে বেশি মূল্য হারিয়েছে ভেনিজুয়েলার মুদ্রা ভেনিজুয়েলিয়ান বলিভার।
গত ৩০ মাসে এই মুদ্রার দাম কমেছে ৯৯.১২ শতাংশ। বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই দেশটিতে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটি ছেড়ে পাশের দেশগুলোতে চলে গেছেন অনেকেই। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ ভেনিজুয়েলাতেই। এরপরের তালিকাতেই রয়েছে জিম্বাবুইয়ে ডলার। ১ ডলারের বিপরীতে জিম্বাবুইয়ের ডলার এখন ৯৫০। গত ৩০ মাসে এই ডলারের বিপরীতে এই মুদ্রার দাম কমেছে ৯৭.৬১ শতাংশ। সম্প্রতি দেউলিয়া হয়ে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্যের একসময়ের উন্নত দেশ লেবানন। ঋণের বোঝা, প্রশাসনে ব্যাপক দুর্নীতি ও সর্বশেষ বৈরুত বন্দরে রাসায়নিক বিস্ফোরণ সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি।
এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে পাড়ি জমাতে শুরু করেছে লেবানিজরা। ব্যাপক মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব দেশটিকে গ্রাস করে ফেলছে। ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ডও গত ৩০ মাসে দাম হারিয়েছে ৯২.২৪ শতাংশ। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার মুদ্রার দাম কমেছে ৭৭.২৬ শতাংশ। প্রতি ডলারের বিপরীতে সিরিয়ার মুদ্রা এখন ৪০১০ পাউন্ড। এদিকে ন্যাটোভুক্ত দেশ তুরস্কেও দেখা দিয়েছে ব্যাপক মূল্যস্ফীতি। রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্রয়ের কারণে আমেরিকার রোষানলে পড়া, ইউরোপে বিনিয়োগ কমে যাওয়া, দেশটির সরকারবিরোধীরা বলছে, ক্ষমতাসীন এরদোগান সরকারের দুর্নীতি ও অদূরদর্শী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা দেশটিকে এমন পরিস্থিতিতে এনে দাঁড় করিয়েছে।
পরিস্থিতি এমন যে দেশটির নাগরিকরা নিজেদের জমানো অর্থের সুরক্ষায় তা দিয়ে ডলার ও সোনা কিনছেন। হাঙ্কির কারেন্সি ওয়াচলিস্টের তথ্যমতে দেশটির মুদ্রার দাম গত ৩০ মাসে ডলারের বিপরীতে কমেছে ৬৬.৫৭ শতাংশ। বর্তমানে প্রতি ডলারের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১৭.৮০ লিরা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে গেলে ইরানের ওপর আবারও পশ্চিমা অবরোধ কার্যকর হয়, যা দেশটির মুদ্রার দামেও প্রভাব ফেলেছে। ইরানিয়ান রিয়েল গত ৩০ মাসে দাম হারিয়েছে ৫৮.২৪ শতাংশ। বর্তমানে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৩ লাখ ১৯ হাজার ইরানিয়ান রিয়েল পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা রয়েছে অর্থনৈতিক সঙ্কটে। বৈদেশিক ঋণের চাপ সামলাতে পারছে না দেশটি। এমনকি ডলারের অভাবে জ্বালানি তেল কিনতে না পারায় দিনের পর দিন পেট্রল পাম্পের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সেখানকার গাড়িগুলো। এমন পরিস্থিতিতে দাম কমছে শ্রীলঙ্কার রুপীর। ৩০ মাসে ৫৪.৩০ শতাংশ দাম কমে এখন ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপী ৩৯৭.৮২। জ্বালানি তেল ও বিদ্যুত সঙ্কটে ভুগছে পাকিস্তান। দেউলিয়ার হাত থেকে পাকিস্তানকে বাঁচাতে চা পান করা থেকে নাগরিকদের বিরত থাকতে বলেছেন পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী। আইএমএফ বলছে, দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে দাম কমছে পাকিস্তানী মুদ্রারও।
পাকিস্তান তার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে ব্যবহার করছে। এর কারণ করোনা মহামারী ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বৈদেশিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে দেশটি দেউলিয়া হয়ে যাবে। হাঙ্কির তালিকার ভিত্তিতে সর্বশেষ ৩০ মাসে পাকিস্তানী মুদ্রার দাম কমেছে ৩২.২৪ শতাংশ। বর্তমানে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানী রুপী পাওয়া যাচ্ছে ২২৮.৫২। ভারতীয় রুপীর দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার ভারতীয় রুপী ডলারের বিপরীতে সর্বনি¤œ স্তরে পৌঁছেছে এবং প্রতি ডলারের দাম ৮০ রুপী অতিক্রম করেছে।
গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপীর দরপতন হয়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। দ্য ইউএস ডলার ইনডেক্স অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অভিন্ন মুদ্রা ইউরোর মানের অবনমন ঘটেছে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ, জাপানী মুদ্রা ইয়েনের ক্ষেত্রে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ আর যুক্তরাজ্যের মুদ্রা পাউন্ডের দরপতন হয়েছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। চীনের ইউয়ানে অবনমনের চিহ্ন কমই দেখা যায়, মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।