ডেস্ক নিউজ
সারাদেশে শুরু হয়েছে খুদে ডাক্তার কার্যক্রম। আজ থেকে শুরু হওয়া কার্যক্রম চলবে আগামী সাত দিন। এই সময়ে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪ কোটি শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে ২৩ লাখ নির্বাচিত ক্ষুদে ডাক্তার। এই সময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে অধ্যয়নরত প্রায় দুই কোটি শিক্ষার্থীর ওজন, উচ্চতা, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ফাইলেরিয়া নির্মূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে কৃমি নির্মূলের লক্ষ্যে ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্ষুদে ডাক্তাররা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। মাদ্রাসাসহ দেশের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কার্যক্রম চলবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাউশি অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সহযোগী সংস্থা এতে সহযোগিতা দেবে।
এ কার্যক্রমে স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে- শিক্ষার্থীদের উচ্চতা, ওজন পরিমাপ এবং দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা,
শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ উচ্চতা, ওজন ও দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে সচেতন করা এবং কোনো সমস্যা থাকলে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা করা।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ২৩ লাখ ক্ষুদে ডাক্তার আজ থেকে আগামী ৭ দিন প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা জানায়, শিশুদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকে ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম শুরু হয়। বিদ্যালয়ের প্রতি শ্রেণি বা সেকশনের জন্য ৩ জন ক্ষুদে ডাক্তার নির্বাচন করা হয়। এ জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ, সপ্তম এবং নবম শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। নির্বাচিতদের ক্ষুদে ডাক্তার উপাধি দিয়ে একজন শ্রেণি শিক্ষক বা গাইড তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়। নির্ধারিত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বাস্থ্যবার্তা প্রদান, বছরে দুইবার জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমিনাশক বড়ি সেবন, বছরে দুবার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (ওজন, উচ্চতা ও দৃষ্টিশক্তির পরিমাপ) করা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন দিবসে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা হচ্ছে ক্ষুদে ডাক্তার দলের প্রধান কাজ।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রমের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান জানান, শুরুতে দেশের সব প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম শুরু হয়। কর্মসূচিকে আরও বেগবান করতে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম চালু করতে ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের সব সিটি করপোরেশনের জোনাল মেডিক্যাল অফিসার, সব জেলার সিনিয়ার স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা পর্যায় থেকে সব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের নিয়ে একদিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। পরে ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকসহ দেশের সব স্বাস্থ্য পরিদর্শক, জেলা স¦াস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক, প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মেডিক্যাল অফিসার বা স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয়ে কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম মাঠপর্যায়ে জোরদার এবং সফলভাবে বাস্তবায়নে একদিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। তবে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সে কার্যক্রম বিঘিœত হলেও ২০২১ সালের এপ্রিলে সম্পন্ন করা হয়।