ডেস্ক নিউজ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আরেকটি স্বপ্নের দ্বার ‘কালনা সেতু’ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। পূরণ হতে চলেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর আরেকটি স্বপ্ন। এখন শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দিনক্ষণ ঘোষণার অপেক্ষা। দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকার সাথে ভারতের দূরত্ব কমে আসবে ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার।
সেতুর মূল কাজ শেষ হওয়ার পর এখন চলছে লাইটিংসহ দৃষ্টিনন্দনমূলক কিছু ছোটখাটো কাজ। আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে যান চলাচলের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হচ্ছে সেতুটি। উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছেন সেতু কর্তৃপক্ষ এবং গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি মানুষ। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মিত হয়েছে।
এ পাড়ে নড়াইলের কালনাঘাট আর ওপাড়ে গোপালগঞ্জের শংকরপাশা। এই দুইয়ের মধ্য বরাবর প্রবাহিত মধুমতি নদীর ওপরে নির্মিত কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। ছয় লেনের সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক এক। উভয়পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে চার মিটার। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর নির্মিত এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সেতুটি ভূমিকা রাখবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
কালনাঘাটে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সাথে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে।
তবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ‘এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত এ ধরনের সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাচ্ছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বড় একটি অংশ। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত বর্তমানে দুই লেন সড়ক চালু আছে। এই অংশে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পাধীন বলে জানিয়েছেন কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান।
লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সিকদার আব্দুল হান্নান রুনু বলেন, সড়ক পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের মানুষের নদ-নদীর কোনো প্রতিবন্ধকতা আর রইল না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে কালনা সেতু। আমরা কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি।