ডেস্ক নিউজ
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর ডাকে এর সদস্য দেশগুলোয় প্রতিবছর এ দিবসটি উদ্যাপিত হয়। বাংলাদেশেও এ উপলক্ষ্যে আজ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘ট্রান্সফর্মিং লিটারেসি লার্নিং স্পেসেস’ (সাক্ষরতা শেখার স্থান পরিবর্তন করা)।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে শিক্ষার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সরকার প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার সচিবালয়ে এ উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন করা হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী সাক্ষরতার এক বছর আগের পুরোনো হার তুলে ধরেন। তার মতে, বর্তমানে দেশে সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ। অথচ ২৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনার তথ্য প্রকাশ করে। তখন সংস্থাটি জানায়, দেশে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিবিএসের তথ্য এখনো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেনি। তাই আগেরটিকেই তারা সর্বশেষ তথ্য হিসাবে মনে করছেন।
গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আরেক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী সাক্ষরতার হার বলেছিলেন ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তার এবারের তথ্য সঠিক ধরে নিলে এক বছরে এই খাতে অর্জন শূন্য। তাহলে প্রশ্ন উঠেছে, ২০৩০ সালে বা ৮ বছরের মধ্যে কীভাবে শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন করা হবে। কিন্তু এজন্য কী ধরনের কর্মসূচি বা প্রকল্প নেওয়া হবে বা কোনো উদ্যোগ আছে কি না, তা তিনি জানাতে পারেননি। কেননা বর্তমানে বয়স্ক শিক্ষার জন্য কোনো প্রকল্প নেই। প্রস্তাবিত প্রকল্প কবে নাগাদ পাশ হবে বা কত বছর লাগবে, তাও কেউ বলতে পারছেন না।
তবে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে মৌলিক শিক্ষাসহ দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে গড়ে তোলার দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে ব্যুরোর ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলমান আছে। এর মধ্যে ব্যুরোর জনবল কাঠামো শক্তিশালীকরণ, ব্যুরোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সক্ষমতার আলোকে নিয়মিত কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিষয় কর্মপরিকল্পনায় আছে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী সমাপ্ত ‘মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের (৬৪ জেলা)’ অর্জনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, সব শিশুর জন্য মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে ঝরে পড়া এবং যারা কখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি-এমন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার কাজ চলমান আছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, দেশে এখনো সাক্ষরতার কোনো রূপরেখা তৈরি করা হয়নি। কতটুকু শিখলে সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন হবে এর একটি রূপরেখা করা হবে। দেশে চার কোটি বেশি মানুষ এখনো সাক্ষরতার বাইরে আছে।