নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ার যুবক এস এম সবুজ। মাত্র ৩৬ বছর বয়সের এ যুবক এ পর্যন্ত ৫৬ বার রক্তদান করেছেন। ২০০০ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ৭ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বয়স লুকিয়ে প্রথম রক্তদান করেন সবুজ। সেই যে শুরু সবুজের রক্তদান, নির্দিষ্ট সময় পর পর তা অব্যাহত রেখেছেন। সে সিংড়া পৌরসভার শোলাকুড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
সর্বশেষ গত ১০ জুলাই সবুজ ৫৬ তম বারের মতো রক্ত দিয়েছেন। পরিবার নিয়ে রাজধানীতে বসবাস করেন তিনি। সিংড়ার শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল, আলিম ও কুড়িপাকিয়া ফাযিল মাদ্রাসা থেকে ২০০৭ সালে ফাযিল (স্নাতক) পাশ করে রাজধানীতে একটি বিদেশী কোম্পানীতে সিনিয়র কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স অফিসার পদে কর্মরত আছেন সবুজ।
এ পর্যন্ত সবুজ প্রসূতি, থ্যালাসেমিয়া রোগী, রক্ত শূন্যতা ও শিশুসহ গুরুতর রোগীদের রক্ত দিয়েছেন। নিজে নির্দিষ্ট দিনে না পারলে অন্যদের মাধ্যমে রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সিংড়া, নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া, গাজীপুর ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় তিনি রক্তদান করেছেন। প্রতিদিনই সবুজের কাছে অন্তত একবার হলেও রক্তের প্রয়োজনে কেউ না কেউ ফোন করেন, খুদে বার্তা পাঠান। তাঁদের জন্য সবুজ ফেসবুকে পোস্ট দেন। তাতে খুব সহজেই রক্ত মিলে যায়।
এস এম সবুজ বলেন, তিনি কোনো কিছুর বিনিময়ে রক্ত দেন না। যাঁদের রক্ত দেওয়া হয়, তাঁরা অনেক কিছু দিতে চান। কিন্তু তিনি রক্ত দেওয়ার বিনিময়ে কিছুই নেন না। তিনি বলেন, ‘রক্ত দিতে ভালো লাগে। আমার ওসিলায় একটি মানুষ বাঁচলে কিংবা সুস্থ্য হলে যে আনন্দ কাজ করে তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন সারাজীবন রক্ত দিয়ে মানুষের সেবা করতে পারি। দেশবাসীর নিকটে পিতা-মাতার জন্য দোয়া কামনা করেন এস এম সবুজ।
সিংড়া ব্লাড ডোনার ক্লাবের সভাপতি আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, রক্তদাতা সবুজ আমাদের গর্ব। প্রতি তিন মাস পর পর তিনি রক্তদান করে থাকেন। রক্ত দিলে শরীরের কোনো ক্ষতি নেই। অনেকেই সুস্থ্য থাকার পরেও রক্ত দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। সকল সুস্থ্য-সাবলীল মানুষের উচিত রক্তদানে এগিয়ে আসা।