ডেস্ক নিউজ
সব যুদ্ধশিশুকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ‘যুদ্ধশিশুদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। যুদ্ধশিশুরা পিতার পরিচয় ছাড়াই সব রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সব বীরাঙ্গনার যুদ্ধসন্তানই এই সুবিধা পাবেন।’
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়ার আন্তরিক চেষ্টায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার বীরাঙ্গনা পচি বেগমের (মৃত) মেয়ে মেরিনা খাতুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধশিশুদের সমস্যার বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিধবা পচি বেগমকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায়। এতে পচি বেগমের গর্ভে সন্তান আসে। পিতৃপরিচয়হীন এই সন্তানই মেরিনা খাতুন। এ সময় লোকলজ্জার ভয়ে পচি বেগম ভ্রূণ হত্যা করতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত সন্তানের জন্ম দেন এই সংগ্রামী নারী। এরপর শুরু হয় মেরিনার সংগ্রামী জীবন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ৪ জুলাই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পান পচি বেগম। কিন্তু পিতার পরিচয় না থাকায় কন্যা মেরিনা খাতুনকে নানা ভোগান্তি এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হয়। এ অবস্থায় যুদ্ধশিশু হিসাবে স্বীকৃতির জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলও (জামুকা) এতে সুপারিশ করে।
জানতে চাইলে মেরিনা খাতুন যুগান্তরকে বলেন, এখনো স্বীকৃতির বিষয়টি জানি না। যুগান্তরের কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। তিনি বলেন, এ ধরনের স্বীকৃতি আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের। কারণ দীর্ঘদিন পিতৃৃ পরিচয়ের জন্য সংগ্রাম করে আসছি। বর্তমানে আমার স্বামী এবং ৪ সন্তান রয়েছে।
উল্লেখ্য, জামুকার সিদ্ধান্তের ফলে শুধু মেরিনা খাতুনই নন, সব যুদ্ধশিশুই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ করলেন।