নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নিয়োগ বানিজ্যের টাকা আত্মসাৎ,করোনাকালিন ফরম পূরণের বোর্ড থেকে ফেরত দেওয়া টাকা আত্মসাৎ, বিগত ১৭ বছরের আয় ব্যায়ের হিসাব বুঝিয়ে না দেওয়া,শিক্ষকদের অনুপস্থিতি দিনের উপঢোকনের টাকাসহ নানা অভিযোগ নিয়ে নাটোরের নলডাঙ্গা সোনাপাতিল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসান নুর মোহাম্মাদ খান অবসরে গেছেন।অবসরে গিয়েও অধ্যক্ষের নিজের বিকাশ নম্বরে যাচ্ছে শাওন আক্তার নামের এক ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা। জালিয়াতি করে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ নিয়ে এধরনের অপকর্ম করার লিখিত অভিযোগ শিক্ষাসচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছে আকতার নামের এক ব্যাক্তি।অপর দিকে বর্তমান কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খন্দকার আরাফ মাহাতাব প্লাবনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিয়োগ বানিজ্যে বন্ধসহ সভাপতির পদ থেকে অপসারণসহ বিভিন্ন দাবীতে মানববন্ধন করেছে অবিভাবক ও এলাকাবাসী ।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,উপজেলার সোনাপাতিল নলডাঙ্গা মহিলা কলেজে ২০০৬ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে নিয়োগ নেন আবুল হাসান নুর মোহাম্মাদ খাঁন।সেই সময় কলেজ পরিচালনা পর্ষদের কোন কমিটি ছিল না বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন আকতার হোসেন নামের এক ব্যাক্তি।অভিযোটি শিক্ষা সচিব,শিক্ষাবোর্ড,জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে প্রেরণ করেন।এছাড়া ১৭টি শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্যের মধ্যে ৩টি শিক্ষক পদের নিয়োগ বানিজ্যের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন অধ্যক্ষ আবুল হোসেন নুর মোহাম্মাদ খাঁন।এছাড়া ২০২০ সালে করোনাকালিন সময়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের শিক্ষাবোর্ড থেকে ফেরত দেওয়া টাকার একতৃতীয়াংশ টাকা ছাত্রীদের ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ, কলেজের বিগত ১৭ বছরের আয় ব্যায়ের হিসাব বুঝিয়ে না দেওয়া,শিক্ষকদের অনুপস্থিত দিনের উপঢোকনের লক্ষাধিক টাকা,শিক্ষকদের সনদ যাচাই ও নাম কর্তনের টাকা,প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎসহ ১২ দফা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।অধ্যক্ষ আবুল হাসান নুর মোহাম্মাদ খাঁন গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অবসরে গেলেও শাওন আক্তার নামের এক ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা অধ্যক্ষের ব্যাক্তিগত বিকাশ নম্বরে এখনও যাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।তবে শাওন নামের ওই ছাত্রীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন উপবৃত্তির টাকা কখনও পায়নি বলে জানান। অপর দিকে গত ১৪ জুন বুধবার বর্তমান কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খন্দকার আরাফ মাহাতাব প্লাবনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিয়োগ বানিজ্যে বন্ধসহ সভাপতির পদ থেকে অপসারণসহ বিভিন্ন দাবীতে মানববন্ধন করেছে অবিভাবক ও এলাকাবাসী।
অভিযোগকারী আকতার হোসেন বলেন,আমি সাবেক অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মাদ খাঁনের নিয়োগ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।পরে রহস্যজনকভাবে তদন্ত হয়নি।
অভিযুক্ত সোনাপাতিল নলডাঙ্গা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবুল হাসান নুর মোহাম্মাদ খাঁন সব অভিযোগ অস্বীকার বলেন, আমার বিকাশ নম্বরে আসা ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা ও শিক্ষাবোর্ড হতে ফেরতকৃত ফরমপূরনের টাকা,শিক্ষক অনুস্থিতির উপঢোকনের টাকা কলেজে ফেরত দেওয়া হয়েছে।কলেজের শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে কলেজের সভাপতি ও কলেজের টাইপিষ্ট শফিকুল ইসলাম সব জানে।আমার নিয়োগ সংক্রান্ত অভিয়োগ ভিত্তিহীন।কলেজের যাবতীয় আয় ব্যায়ের হিসাব সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ থেকে প্রত্যায়ণপত্র নিয়েছি।
সোনাপাতিল নলডাঙ্গা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনজুর আলম বলেন,আবুল হাসান নুর মোহাম্মাদ খাঁন স্যার অবসরে যাওয়ার আগে কলেজের আয় ব্যায়ের হিসাব সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেয়নি।শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের হিসেবের গড়মিল থাকায় কলেজ থেকে কোন প্রত্যায়ন দেওয়া হয়নি।এমনকি অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মাদ খাঁন স্যারে নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের ফাইলপত্র কলেজের সংরক্ষনে নাই।
কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খন্দকার আরাফ মাহাতাব প্লাবনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন,মহিলা কলেজের ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা সাবেক অধ্যক্ষের বিকাশ নম্বরে যাচ্ছে এমন কোন অভিযোগ পায়নি।অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হবে।