নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের বড়াইগ্রামে স্বামী পরিত্যক্তা প্রিয়া খাতুন নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত দশটার দিকে উপজেলার মেরিগাছা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত প্রিয়া খাতুন একই উপজেলার নগর ইউনিয়নের মেরিগাছা এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে ও ঈশ্বরদী ইপিজেড এর শ্রমিক।
নিহতের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে পারিবারিক বোধের জেরে তার মেয়ের সাথে জামাইয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। বিচ্ছেদের পর থেকে তার একমাত্র এক বছর বয়সী নাতনীকে নিয়ে মেয়ে তার বাড়ীতেই ছিল। স্বামীর ঘর ছেড়ে আসার পর থেকে স্বামী তাকে প্রতিনিয়তই বিরক্ত করতো। আজ কাজ শেষে বাড়ীর ফিরার পথে কে বা কাহারা তার মেয়েকে এখাবে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি লোকমুখে মুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পায়। তিনি তার মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবী জানান।
স্থানীয়রা জানান , কোন কিছু বুঝার আগেই কয়েকজন যুবক চেহারার মানুষ অস্ত্র দেখিয়ে একটি মেয়েকে টেনে হিচরে ভ্যান থেকে নামিয়ে নিয়ে পাশের একটি পাটের জমির দিকে নিয়ে গেলো। এর কিছুক্ষন পরেই ভ্যান চালকের চিৎকারে তারা এগিয়ে গিয়ে ঘটনাটি শুনে পাটের জমির দিকে গিয়ে মেয়েটির রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পায়। এরপর তারা হত্যাকারীদের গ্রেফতারে বিক্ষোভ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে তারা বিক্ষোভ করা থেকে বিরত হয়।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক জানান, পাবনার ইশ্বরদীর ইপিজেড এর কাজ শেষে প্রিয়া খাতুন বাসযোগে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার জন্য নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কয়েন বাজারে বাস থেকে নামে। প্রতিদিনের মত সেখান থেকে ব্যাটারি চালিত ভ্যানযোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। পথে মশিন্দা এলাকায় ভ্যানটির গতিরোধ করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে পাশের একটি পাটের জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাথারী কুপিয়ে ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। পরে ভ্যান চালকের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরৎহাল প্রতিবেদন তৈরী করেন। পরে সিআইডি ও পিবিআইকে সংবাদ দেয় পুলিশ। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ শেষে মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভ্যান চালক মনির হোসেনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন বলেন, তারা সংবাদ পেয়েছেন একটা হত্যাকান্ডের। সংবাদ পেয়ে একটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশকে সহযোগীতা করা করা হবে।