নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশী পণ্যবাহী একটি জাহাজ সহ ২৩ নাবিক ও ক্রুকে জিম্মি করে রেখেছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। জিম্মিদের মধ্যে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মাহমুদ জয় নামে এক নাবিক রয়েছেন। ছেলে জলদস্যুদের কাছে জিম্মি কথাটা জানার পর থেকেই দুশ্চিন্তা ও আতংকিত হয়ে পড়েছে তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা জানার পর থেকেই গ্রামজুরে চলছে নানা আলোচনা।জলদস্যুদের হাতে জিম্মি মাহমুদ জয় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সালাইনগর গ্রামের জিয়াউর রহমান ও আরিফা দম্পতির ছেলে। তিনি ওই জাহাজের অর্ডিনারি সি-ম্যান (সাধারণ নাবিক) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জলদস্যুদের হাতে আটকের পর মাহমুদ জয় তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন। তখন বিপদের কোন কথা বলেনি সে। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে এ ঘটনা শোনার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় আতংকিত হয়ে রয়েছেন তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটিসহ ২৩ বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রুকে আটক করে জলদস্যুরা। জানা গেছে, বাংলাদেশের এমভি আবদুল্লাহ নামে একটি পণ্যবাহী জাহাজ কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। পরে মঙ্গলবার দুপুরে জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে তা দখলে নেয় প্রায় ৫০ জন সোমালিয়ান জলদস্যু। তাদের অনেকের হাতে অস্ত্র ছিল বলে জানা গেছে।
জয়ের চাচাতো ভাই মারুফ আলী বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে ভাই তাকে ফোন দিয়ে জানায় যে ‘তাদের জাহাজে জলদস্যুরা আক্রামণ করেছে। তার সঙ্গে আর কথা নাও হতে পারে’। বাড়ীতে কাউকে কিছু বলিস না’। এখন মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে পারে বলেই ফোন কেটে দেয়। পরবর্তীতে মেসেজ করলে সন্ধ্যা ৬ টা ৪০ মিনিটে জয় মেসেজ দিয়ে জানায় দস্যুরা ফোন কেড়ে নিয়েছে আর কথা হবে না। ভুক্তভোগী এ ব্যক্তি তার মা আরিফা বেগমকে বলেন, ‘মা আমার ফোনে ইন্টারনেট থাকবে না, এখন আর কথা নাও হতে পারে’। আমার সঙ্গে হয়তো এক-দুই মাস কথা নাও হতে পারে’। ঈদে যা কেনাকাটা করা লাগবে তা তোমরা কিনে নিও। জয়ের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, প্রথমে কিছু জানতে পারিনি। ছেলের সাথে কথাও বলেছি দুপুরে। বাড়ীতে এসে জানতে পারি যে আমার ছেলেসহ ২৩ জন জলদস্যুদের কাছে জিস্মি হয়েছে। আমার ছেলেসহ নাবিকদের দ্রুত উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনার দাবি জানাই সরকারের কাছে। এ বিষয়ে নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঞা সাংবাদিকদের জানান, জয় মাহমুদের সংবাদ পাওয়ার পর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। বিষয়টি সরকারের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তারা দেখছেন। সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।