নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে যথাযোগ্য মর্যাদায় ছাতনী গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার ছাতনী স্লুইচ গেট সংলগ্ন শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা। পরে শহীদ পরিবারের আয়োজনে এবং শহীদ পরিবারের সদস্য দুলাল সরকারের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার জাহান সাথী, ছাতনী ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন সরকার, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসেদ আলী মোল্লাসহ স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। স্বাধীনতা লাভের পরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আজও এসব শহীদদের সরকারিভাবে স্বীকৃতি মেলেনি ও হত্যাকারিদের বিচার হয়নি। শহীদ পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর দাবী দ্রুত তাদের স্বীকৃতি দিয়ে বিচার সপন্ন করা হোক সেই হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িতদের।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে ৪ জুন ভোর রাতের দিকে হাফেজ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পাক হানাদার ও তাদের দোসর কয়েকশ বিহারী নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী সহ আশেপাশের ১০ টি গ্রামের মানুষদের ধরে পিঠমোড়া করে বেঁেধ ছাতনী স্লুুইজ গেটে এনে জড়ো করে। পরে তাদের গুলিসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করে। তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে এসিড দিয়ে ঝলসানো হয়। পরে এসব শহীদদের লাশ ছাতনী স্লুইজ গেটসহ আশপাশের পুকুর ও ডোবায় মাটিচাপা দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের নাটোরের ছাতনী গ্রামের গণহত্যার সেই নৃশংস ও হৃদয় বিদারক কথা আজও এ এলাকার মানুষের মনে নাড়া দেয়। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে বিভিন্ন স্থানে যে গনহত্যা চালানো হয় তার মধ্যে নাটোরের ছাতনী গ্রামের গণহত্যা ছিল নৃশংস ও হৃদয় বিদারক। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা তৎকালীন এমসিএ শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর বাড়ি ছাতনী গ্রামে হওয়ায় এই জনপদের অধিকাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। এ কারণে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা অবাঙ্গালিদের আক্রোশে পড়ে এই গ্রাম।