নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুক্তিপনের দাবীতে লিবিয়ায় অপহরনকারীদের কাছে জিম্মি নাটোরের গুরুদাসপুরের ৪ যুবককে উদ্ধার করেছে লিবিয়ার সেনাবাহিনী। আজ রবিবার দুপুরে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধারের সেনা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওই ৪ যুবকের অভিভাবকরা। এখনো তাদের সন্তানদের সাথে কোন কথা হয়নি পরিবারের সদস্যদের। তবে মুক্তি পাওয়ার পর সোহানের পাঠানো ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা তারা পেয়েছেন।
সোহানের মা ধুলি বেগম বলেন, তাদের ৪ সন্তানকে আটকে রেখে যেভাবে নির্যাতন করেছে এবং তাদের মুক্তির জন্য ৪০ লাখ টাকা চেয়েছে। এটা দেখা ও জানার পর আমরা আতংকে ছিলাম যে আমাদের সন্তানকে আর ফিরে পাবো কিনা। পরে সেখানে থাকা অন্যদের সহযোগিতায় লিবিয়ার পুলিশকে জানানোর পর লিবিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের ৪ জনকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধারের পর সন্তানদের সাথে কথা না হলেও একটি ভিডিও বার্তা তারা পেয়েছেন। সেই ভিডিওতে তার ছেলে জানিয়েছে মা ও বাবা আমরা মুক্তি পেয়েছি আপনারা আর চিন্তা করবেন না। আমরা এখন এখানকার সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছি। আমরা ভালো আছি।
জিম্মি বিদ্যুতের মা বিউটি বেগম বলেন, দুপুরে সোহানের মায়ের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন তাদের সন্তানরা মুক্তি পেয়েছে। সেখানকার প্রশাসন তাদের উদ্ধার করেছে। তিনি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। এখন শুধু তার সন্তানের সাথে একবার কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছেন। সেই সাথে যারা এমন কাজ করেছে তাদের বিচার দাবী করেন।
সাগরের মা সাকেরা বেগম বলেন, তাদের কোন টাকা পয়সা নেই, কোন জমি সম্পদ নেই, সংসাদের অভাব দুর করতে ধারদেনা করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। এখনো তাদের ঋন শোধ হয়নি। এমন সময় তার সন্তানের এমন বিপদের খবর পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তারা। আজ ছেলে মুক্তি পাওয়ার খবরে বুকে পানি পেয়েছেন। বুকের মানিকের সাথে একবার মোবাইলে দেখে কথা বলতে ব্যাকুল তিনি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সুজা জানান, মুক্তিপনের জন্য যাদের জিম্মি করে নির্যাতন করা হয়েছিল তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন। কিভাবে তাদের সহযোগিতা করা যায় সেই সব রকম চেষ্টা তিনি করেছেন। আজ জিম্মি যুবকরা মুক্তি পেয়েছে শুনে তার খুব ভালো লেগেছে। তিনি নাটোরের সাংবাদিকদের সহ দেশের ও লিবিয়ার প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন জানান, তিনি শুনেছেন জিম্মি ৪ যুবককে লিবিয়ার প্রশাসন উদ্ধার করেছে। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধোতন কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। এ বিষয়ে এরচেয়ে বেশী কিছু তিনি জানেন না।