সিংড়া সংবাদদাতা:
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের দূর্ভোগ কমাতে নাটোরের চারটি মহাসড়কের দুইটির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে চলাচল অনুপযোগী উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক। ঈদের ১০দিন আগে সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা থাকলেও কাজের ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় অসহনীয় দূর্ভোগের আশঙ্কা করছেন এই মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। তবে ঈদের আগেই অধিকাংশ সড়ক সংস্কারের মাধ্যমে চলাচল উপযোগী করার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় সড়ক বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈদে ঘরমুখো মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে এবার রমজানের শুরুতেই নাটোর-বগুড়া মহাড়কের ১৪ কিলোমিটার এবং বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের গুরুদাসপুরে কাছিকাটা এলাকার আত্রাই টোল প্লাজা সংলগ্ন খানাখন্দে পরিণত সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সড়ক বিভাগ। এছাড়া চলাচলে অনুপযোগী বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক সংস্কার কাজও শুরু হয়। এসব সড়কের সংস্কার কাজ পরিদর্শনে গিয়ে ২০ রমজানের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু ২০ রমজানে কাজ শেষ না হওয়ায় ঈদে এ সড়কে চরম দূর্ভোগ হবে বলে মনে করছেন এই মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, নাটোর-ঢাকা (বনপাড়া-হাটিকুমরুল) মহাসড়কের ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে গুরুদাসপুর কাছিকাটা এলাকার আত্রাই টোল প্লাজা সংলগ্ন কিছু সড়ক খানাখন্দে পরিণত থাকায় তা রমজানের শুরুতেই সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যা প্রায় শেষের পথে। এছাড়া ৩২ কিলোমিটার নাটোর- বগুড়া মহাড়কের ১৪ কিলোমিটার খানাখন্দ সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এ কাজের জন্য প্রায় ১৮ কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের নাটোর অংশের ৩২ কিলোমিটারের মধ্যে কয়েক কিলোমিটার এখনও খানাখন্দ অবস্থায় রয়েছে। উত্তরাঞ্চলগামী বাসগুলোর এই স্টপেজের দুইপাশের সড়ক প্রসস্ত করণ কাজ ঈদের আগে দূর্ভোগ বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ চালক ও যাত্রীদের। এছাড়া বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ায় সড়কের কাঁচা অংশটুকুও কাঁদায় পরিণত হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সিংড়া উপজেলার শেরকোল ব্রীজ থেকে সিংড়া বাজার পর্যন্ত থেমে থেমে সড়কের খানাখন্দ সংস্কার কাজ কয়েক মাস ধরে চলছে। এ পথে চলাচলকারী যানবাহনের চালকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটি এক্সক্যাভেটর ও একটি রোলার মেশিন দিয়ে ঢিমেতালে চলা রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় ঈদের আগেও তা শেষ হবে কি না, এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। বাসচালক আফাজ উদ্দীন ও রবিউল ইসলাম জানান, গেল কয়েক মাস ধরে মহাসড়কটিতে দূর্ভোগ তাদের পিছু ছাড়ছে না। অপরিকল্পিত খোঁড়াখুড়িতে যান চলাচলে বিঘœ সহ প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মাইক্রোবাস চালক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, এ পথে দিনদিন দূর্ভোগ বেড়েই চলছে। রাস্তা সংস্কারের জন্য ব্যবহৃত উপকরণ কমতির কারণে কচ্ছপগতিতে চলছে কাজ। বৃষ্টি হলেই সড়কের দূর্ভোগে বেড়ে যায়। সিংড়া মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম বলেন, মহাসড়কের বেশ কিছু অংশে ভাঙ্গা সড়কের উপরই কার্পেটিং করা হয়েছে। এতে কাজের মান খারাপ হচ্ছে। যেভাবে কাজ চলছে তাতে ঈদের আগে সড়ক সংস্কারের সম্ভাবনা খুব কম। যেটুকুও সংস্কার হয়েছে, তাও নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ হোসেন তালুকদার বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘœ করতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ১৪ কিলোমিটার সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। ঈদের আগেই ৭কিলোমিটার সংস্কার কাজ শেষ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ঈদের আগেই সকল সড়কের সংস্কার কাজ সম্পন্ন না হলেও এসব সড়ক-মহাসড়ক যাতায়াত উপযোগী করা হবে বলে তিনি জানান। জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতে এবার সড়ক পথে নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ঈদের আগেই সংস্কার কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।