ডেস্ক নিউজ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাধ্যমে কারাবন্দী চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। মোরশেদ খানের ব্যক্তিগত সহকারী আতাউল সন্ধ্যায় ৭টার সময় দলীয় কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র নিয়ে যায়। কিন্তু দফতর প্রধান রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ স্কাইপিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। তার বৈঠক শেষে রাত ১০টার দিকে পদত্যাগপত্র দেয়া হয়।
পদত্যাগপত্রে মোরশেদ খান লিখেছেন, ‘আজ অনেকটা দুঃখ ও বেদনাক্লান্ত হৃদয়ে আমার এই পত্রের অবতারণা। মানুষের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। আমার বিবেচনায়, সে ক্ষণটি বর্তমানে উপস্থিত এবং উপযুক্তও বটে।’ তবে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তার মধ্যে ক্ষোভ ছিল। মোরশেদ খানের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, মোরশেদ খান আরো আগেই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, দলের পদায়ণে মূল্যায়িত না হওয়া এবং বিএনপির সাম্প্রতিক লন্ডনমুখী রাজনীতি পছন্দ না হওয়ায় দল ত্যাগ করেন এই নেতা।
এছাড়া বিগত ১ নভেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর নবগঠিত কমিটিতে যুবদলের সাবেক নেতাদের মূল্যায়ন না করায় কেন্দ্রীয় পদ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠায় সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এমএ হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েক নেতা। আর সম্প্রতি বিএনপির সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দলত্যাগে বিএনপির ভাঙ্গনের গুঞ্জন আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে সর্বমহলে।
অপরদিকে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত বিবাহিত নেতাদের শান্ত করতে তাদের অন্যায্য দাবী মেনে নিয়ে পরিবেশ শান্ত রাখতে পানি পান করিয়ে আমরণ অনশন ভাঙেন মির্জা ফখরুল। ঠিক এর মাঝেই দলের এত এত নেতাদের পদত্যাগ যেন বিএনপির ‘লেজেগোবরে’ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে করেছে আরো ষ্পষ্ট, সেই সাথে প্রবীণ দলটির এগুচ্ছে ভাঙ্গনের দিকে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন বিএনপির দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না আসায় হতাশায় ভুগছেন নেতাকর্মীরা, সেইসাথে সাম্প্রতিক আন্তঃকোন্দল, অনিয়ম ও দলীয় দুর্নীতি বেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় বিএনপির একের পর এক নেতার পদত্যাগ, দলটির ভবিষ্যৎকে ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকারে।