সেনা বাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে অত্যাধুনিক ও বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যতে যুদ্ধ ক্ষেত্রের সকল ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখবেন প্রশিক্ষনই সর্ব্বোচ্য সোল্ডার। ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে মাতৃভুমির অখন্ডতা রক্ষায় তথা জাতীয় যেকোন প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘ফোর্সেস অব গোল ২০৩০’ এর আলোকে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের ২৭ আরই এবং ২৩ আরই ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দুইটি ইসিবি ব্যাটালিয়নের সাংগঠনিক কাঠামো স্থায়ীকরণের কাজ চলমান রয়েছে। পারমানবিক নিরাপত্তা ও ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা সেল এর সাংগঠনিক কাঠামোয় একটি কম্পোজিট ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স একটি কারিগরি, সরঞ্জামাদি নির্ভর এবং বহুমুখী প্রতিভা সম্পন্ন কোর-যার সহায়তা যুদ্ধক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে একাবিংশ শতাব্দীর কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে। কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স সেনাবাহিনীর উন্নয়নের পাশাপাশি দেশগঠনমূলক কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ, বিভিন্ন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প, হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প, এয়ারপোর্ট রোডের আন্ডারপাস মীরপুর ফ্লাইওভার, রুমা ও থানচি ব্রীজ নির্মাণ, উখিয়া ও রামুতে বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ ও সংস্কার, পদ্মা বহুমুখী সেতুর সংযোগ সড়ক ও রেলওয়ে লিংক প্রজেক্ট এর মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীকে নিয়োজিত করা হয়েছে।
সেনা প্রধান আরো বলেন, সেনাবাহিনী প্রথাগত কাজের পাশাপাশি অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত উন্নতিসহ সকল উন্নয়নমূলক কর্মকার্ন্ডে যখনই সুযোগ আসবে তখনই তাতে অংশগ্রহন করে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
সেনাবাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সদস্যগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সশস্ত্র বাহিনীর এক হাজার ৫৩৩ জন বীর সেনানী যুদ্ধে শহীদ হন। এরমধ্যে এই কোরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরসহ ৮৮ জন অন্যতম। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার এন্ড স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং এর চারটি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান করেছেন। আজ মঙ্গলবার নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ১ ও ৮ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন এবং ৫ ও ৭ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন সদস্যবৃন্দ কালার প্যারেডে অংশগ্রহন করেন এবং সেনা প্রধানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহন করেন।
সেনাবাহিনীর সামরিক ঐতিহ্য অনুযায়ী যে কোন ইউনিটের জন্যে রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি গৌরবের। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন সামরিক অফিসারবৃন্দ, বেসামরিক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ইঞ্জিনিয়ার কোরের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।