ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক সহযোগিতার পর থেকে আজ অব্দি ভারত বাংলাদেশের পাশে থকেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ অক্টোবর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ ছাড়া উদ্বোধন করা হয়েছে তিনটি যৌথ প্রকল্প। এর মধ্যে অন্যতম প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং চুক্তিপত্র বিনিময় করেন।
নয়া দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে ঢাবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস উভয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং চুক্তিপত্র বিনিময় করেন। এক নজরে দেখা যাক, এই চুক্তির বিনিময়ে কি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
শিক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধিঃ পাঁচ বছর মেয়াদি এই চুক্তি স্বাক্ষরের মূল লক্ষ্য হল উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমতা ও পারস্পরিক সুবিধাদানের নীতির ভিত্তিতে শিক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং পারস্পরিক সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটানো। চুক্তির ফলে ভারত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সংক্রান্ত সকল ধরনের সহযোগিতা করবে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের সহযোগিতা করবে।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং তথ্য বিনিময়ঃ এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক বিনিময় করা হবে। উভয় বিশ্ববিদ্যালয় অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং প্রকাশনা ও তথ্য-উপাত্ত আদান প্রদান করবে। এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে সেমিনার ও সম্মেলন আয়োজন করবে। এছাড়া, তারা যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী সঠিক যন্ত্রপাতির অভাবে সঠিকভাবে গবেষণা করতে পারেনা। কিন্তু এই চুক্তির ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভারতের হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গবেষণা চালাতে পারবে।
বন্ধুত্বের সম্পর্ক জোরদার হবেঃ চুক্তি বাস্তবায়িত হবার ফলে বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ভারতে যাবে এবং ভারত থেকে এদেশে আসবে। এতে দু’দেশের মাঝে পূর্বের চাইতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার হবে। যা আমাদের সামাজিকতা, সহ ব্যবসা বাণিজ্যের ও প্রসার ঘটবে।
ভিসা জটিলতা হ্রাসঃ দু’দেশের মাঝে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ঘন ঘন যাতায়াত এবং অধিক পরিমাণ শিক্ষক শিক্ষার্থী যাতায়াতের ফলে দুদেশের মাঝে ভিসা জটিলতা দূর হবে এবং ভিসা পাওয়া আরো সহজতর হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে তারা দুই বারের মঙ্গলে অভিযান পরিচালনা করে। দুঃখজনক ভাবে ব্যর্থ হয়ে যায় একেবারে শেষ সময়ে। তারা এই অভিযান পরিচালনা করেছিল নিজেদের লোকবল ও প্রযুক্তি দিয়ে। এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ভারতের সাথে নিজেদের প্রযুক্তি উন্নতির পাশাপাশি তাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানলাভ করতে পারবে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে যে সমঝোতা স্বারক চুক্তি হয়েছে তাতে বাংলাদেশই লাভবান হবে।