নিউজ ডেস্ক :
পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধে ১৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। গত সোমবার এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দের অর্থ শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ২০ বছরে ৫ শতাংশ সুদে প্রতি ছয় মাসের কিস্তিতে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আর এ জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণ চুক্তি করতে হবে। চিঠিতে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, বরাদ্দ দেওয়া অর্থ কেবল শ্রমিকদের বকেয়াসহ মজুরি এবং উত্সব ভাতা হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। এর বাইরে অন্য কোনো খাতে দেওয়া যাবে না। বিজেএমসি শ্রমিকদের প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে এ টাকা পাঠানো হবে। শুধু তাই নয়, বরাদ্দ দেওয়া অর্থ ব্যয়ের সাতদিনের মধ্যে মিলভিত্তিক শ্রমিকদের তালিকাসহ বিস্তারিত বিবরণী অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, লোকসানি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিজেএমসির কাছে এতদিন শ্রমিকদের বেতন ও ভাতা দিতে ভরসা পায়নি সরকার। তাই, সরকারি কোষাগার থেকে সরাসরি শ্রমিকদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে এ অর্থ জমা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধসহ নয় দফা দাবিতে শ্রমিকরা গত ১৩ মার্চ থেকে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের এ নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫-এর সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বীমার বকেয়া টাকা প্রদান, টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ দান ও তা স্থায়ীকরণ, মৌসুমের সময় পাট কিনতে অর্থ বরাদ্দ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া মজুরি ও বেতন প্রদান এবং ১৮ মের মধ্যে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হবে বলে গত ৭ এপ্রিল বিজেএমসির পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এরপর শ্রমিকরা অবরোধ ও কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে যোগ দেন। গত ২৫ এপ্রিল এ নিয়ে আরো এক সপ্তাহ সময় নেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এরপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মজুরি না পাওয়ায় ৫ মে থেকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। সারা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোয় একযোগে এ কর্মসূচি পালন শুরু হয় ১৩ মে। এর পরবর্তী সময়ে ১৯ মে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। সে সময় ২২ মে থেকে প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন পাটকল শ্রমিকরা।