নিউজ ডেস্কঃ বন্ডেড ওয়্যার হাউসের আমদানি করা পণ্যের অপব্যবহার রোধ করতে অটোমেটেড হচ্ছে ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউসগুলো। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত সফটওয়্যার প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৫৫-৬০ হাজার লিটার মদ ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউসের মাধ্যমে ব্যবহার হয়। এসব বাইরেও বিশাল পরিমাণের মদ বাইরে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এতে সফল হলে দেশের সব ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউস একই সফটওয়্যারের আওতায় আসবে।
ফলে বন্ধ হবে খোলাবাজারে অর্থাৎ বারগুলোতে অবৈধ মদ বিক্রির কারবার। মোটা অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি থেকে বেরিয়ে আসবে সরকার। ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউসে নতুন করে কিছু খাদ্যপণ্য যোগ করতে যাচ্ছে এনবিআর। কূটনীতিকরা তাদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী এসব সুবিধা ভোগ করতে পারবেন ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউস থেকে। সেক্ষেত্রে এনবিআর থেকে অনুমতি নিতে হবে। আর বন্ডেড হাউসগুলো অটোমেটেট হলে প্রাপ্যতা নিয়ে লুকোচুরির সুযোগ থাকবে না। কার কী পরিমাণে প্রাপ্যতা রয়েছে তা সহজেই জানা যাবে। সেই অনুযায়ী সুবিধা নিতে পারবেন কূটনীতিকরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোরের কাগজকে বলেন, প্রতি বছর ডিপ্লোমেটিক ওয়্যার হাউসগুলোর প্রাপ্যতা নিয়ে অভিযোগ আসে। অনেক ক্ষেত্রে এসব ওয়্যার হাউসের সুবিধা নিয়ে অপব্যবহারের অভিযোগ আসে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্য বাহিরে বিক্রির অভিযোগ ওঠে। যার কারণে বন্ডেড ওয়্যার হাউসের অপব্যবহার বন্ধে ডিপ্লোমেটিক ওয়্যার হাউসগুলোকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ডিজিটালাইজ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। শিগগিরই সব ডিপ্লোমেটিক ওয়্যার হাউসকে সফটওয়্যারে নিয়ে আসা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
সূত্রে আরো জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে ৬টি ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউস রয়েছে। ওয়্যার হাউসগুলো হলো- ঢাকা ওয়্যার হাউস লিমিটেড, সাবির ট্রেডার্স লিমিটেড, ন্যাশনাল ওয়্যার হাউস, টস বন্ড প্রাইভেট লিমিটেড, ইস্টার্ন ডিপ্লোমেটিক সার্ভিস এন্ড কবির এন্ড কোম্পানি, পর্যটন করপোরেশন এন্ড বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এসব ওয়্যার হাউসের মাধ্যমে দেশে অবস্থানরত কূটনীতিকরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় মদ পান করতে পারেন। কূটনীতিকদের পদবি অনুযায়ী তারা নির্ধারিত পরিমাণ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে দেশে বসবাসরত আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিদেশিরা এসব সুবিধা পেয়ে থাকেন। আর এসব সুবিধার অপব্যবহার করে দেশের এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বাইরে চড়া দামে বিক্রি করে দেন।
এর ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারায় অন্যদিকে অবৈধ পণ্য হিসেবে বাইরে বিক্রি করে কিছু অসাধু চক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে বন্ড কমিশনারেটে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, বন্ড সুবিধায় আমদানি করা এসব পণ্য বাইরে বিক্রির অভিযোগ উঠলে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে না এনবিআর। রিট করে এসব বিষয় ঝুলিয়ে রাখা হয়, যা সমাধান হতে বছরের পর বছর সময় ব্যয় হয়। মূলত কূটনীতিকদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এনবিআর ডিজিটালাইজড করছে ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউসগুলো।