ডেস্ক নিউজ
ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বিতরণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আবারও মোট ভাতার ৭৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে বিতরণের (সংশোধিত) চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ ) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সরকার থেকে ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতিতে তালিকাভূক্ত মোট ভাতা গ্রহীতার ৭৫ শতাংশকে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ভাতা বিতরণ করা হবে।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন এবং ‘নগদ’ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম।
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং সচিব মাহফুজা আখতার উপস্থিত ছিলেন।
গতবছর সমাজসেবা অধিদপ্তর মোট ৮৮ লাখ ৫০ হাজার উপকারভোগীর মধ্যে ৭৬ লাখ ১৩ হাজার উপকারভোগীকে তাদের ভাতা ‘নগদ’ ও অপর একটি এমএফএস-এর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়। এবারও একই পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণ করা হবে।
ফলে আগের মতোই বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ভাতা পাবেন। এর আগে গত অর্থ বছরেও ‘নগদ’-এই চারটি কর্মসূচীর আওতায় মোট সুবিধাভোগীর ৭৫ শতাংশ-কে ভাতা পৌঁছে দিয়েছে। এবার তৃতীয় লিঙ্গ ও বেদেদের-কেও এই পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভাতা ভোগীরা প্রয়োজন মতো ভাতার টাকা ব্যবহারের পাশাপাশি বাড়ির পাশে ‘নগদ’ উদ্যোক্তা পয়েন্ট থেকেও তুলে নিতে পারবেন। সরকারি এই ভাতা ক্যাশ আউট করতে উপকারভোগীকে অতিরিক্ত কোনো অর্থ খরচ করতে হবে না। সরকার মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অপারেটর ‘নগদ’-কে প্রতি হাজারে ৭ টাকা ক্যাশ আউট চার্জ দেবে, বাকি টাকা ‘নগদ’ বহন করবে।
এর আগে করোনা মহামারির সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০ লাখ অসহায় পরিবারকে দুইবার করে এমএফএস-এর মাধ্যমে ঈদ উপহার বিতরণ করেন; যার মধ্যে ১৭ লাখ পরিবার ‘নগদ’-এর মাধ্যমে উপহার পায়। কোভিডের সময় আরো অনেক অনুদান ও সরকারি সহায়তা বিতরণের পাশাপাশি একইভাবে প্রাথমিক পর্যায়ের দেড় কোটি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ কেনার ভাতাও ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ করেছে সরকার।
‘নগদ’-এর মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর ভাতা বিতরণ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘ভাতা এবং সরকারি অনুদান বিতরণে ‘নগদ’ ইতিমধ্যেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আবারো একইভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর ভাতা বিতরণে আমাদের সঙ্গে চুক্তি করা ‘নগদ’-এর ওপরে আস্থারই প্রতিফলন। আমরা সব সময়ই দেশ ও দেশের জনগণের কথা মাথায় রেখে আমাদের সেবাগুলোকে সাজিয়েছি। সে কারণেই অল্প সময়ে আমরা সরকার ও জনগণের ভালোবাসা পেয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, ‘নগদ’ সরকারের পুরো ভাতা ও অনুদান বিতরণ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করবে এবং জনগণও কোনো রকম ঝক্কি ছাড়াই তাদের প্রাপ্য বুঝে পাবে।’
‘নগদ’-এর নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম বলেন, “নগদ অনেকদিন ধরেই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বিতরণ করছে। আশা করবো নতুন এই সংশোধনী চুক্তির ফলে সর্বাধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা আরো সুষ্ঠূ ও নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে যেতে পারবো।”
বর্তমানে ‘নগদ’-এর ছয় কোটির বেশী নিবন্ধিত গ্রাহক আছে এবং প্রতিদিনের গড় লেনদেন সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।