ডেস্ক নিউজ
করোনা মহামারীতে এয়ারলাইন্সগুলোকে অবশ্য পালনীয় স্বাস্থ্যবিধি দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক দেশি-বিদেশি বিমান সংস্থা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেছে। কোভিড সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহনের দায়ে জরিমানা করেছে শাহজালাল বিমানবন্দরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ রকম ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৮৫টি মামলা এবং ১৬টি এয়ারলাইন্সকে শাস্তি পেতে হয়েছে। জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল এ বিষয়ে আমাদের সময়কে বলেন, গেল তিন মাসে ৮৫ মামলায় প্রায় ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শাস্তির ধরন বিবেচনা করে সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। কোভিড সনদ না আনা, কোভিড পজিটিভ যাত্রী পরিবহন, যুক্তরাজ্যের যাত্রীর বেলায় হেল্প ডেস্ককে অবহিত না করা এ রকম অপরাধই বেশি।
কোভিড নেগেটিভ সনদ ছাড়া কোনো যাত্রী দেশে আনা যাবে না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এমন নির্দেশনা আছে। গত ডিসেম্বরে এমন নির্দেশনা পেলেও ৯ ডিসেম্বর ১১৮ যাত্রী আনে মালদিভ এয়ারলাইন্স। এ জন্য ২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর একদিন পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পিসিআর রিপোর্ট ছাড়া ৬ জন যাত্রী পরিবহন করে। এর দায়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আবার কোভিড পজিটিভ যাত্রী আনার ঘটনা ঘটে ১২ ডিসেম্বর। এয়ার এশিয়াকে এ জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ পিসিআর সনদ আনার ঘটনা ঘটে ১৪ ডিসেম্বর। একই দিনে সনদবিহীন যাত্রী পরিবহন করে আরেকটি এয়ারলাইন্স। এভাবে প্রতিদিনই নিয়ম লঙ্ঘন করে যাত্রী পরিবহন করতে থাকে এয়ারলাইন্সগুলো। সৌদি এয়ারলাইন্স তিনটি ফ্লাইটে যথাক্রমে ২৫৯, ০৩ ও ২৫৪ জন যাত্রী পরিবহন করে কোভিড সার্টিফিকেট ছাড়া। এর একদিন বাদ দিয়ে ১৭ ডিসেম্বরেও যাত্রী পরিবহন চলে পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট ছাড়াই। এভাবে ওমান, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন গন্তব্য থেকে সনদবিহীন যাত্রী আসতে থাকে। এ জন্য ৫ হাজার, ১০ হাজার, ২০ হাজার, ৫০ হাজার, এক লাখ, দুই লাখ ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে শাস্তি নির্ধারণ করেন বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ডিসেম্বর গড়িয়ে জানুয়ারিতেও এভাবে নিয়ম লঙ্ঘন করে এয়ারলাইন্সগুলো। ফেব্রুয়ারি মাসেও একই অবস্থার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আবার হেল্প ডেস্ককে যাত্রীর বিষয়ে অবহিত না করার ঘটনাও আছে। ২০ ফেব্রুয়ারি কাতার এয়ারওয়েজে যুক্তরাজ্য থেকে ৯ যাত্রী আসেন। তাদের ব্যাপারে হেল্প ডেস্ককে অবহিত না করায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। একই অপরাধ করে ইত্তিহাদ এয়ারওয়েজ। ৪ ফেব্রুয়ারি ১৭ যাত্রী যুক্তরাজ্য থেকে আনে বিমান সংস্থাটি। এ জন্য ২৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি বৈরুত থেকে একজন কোভিড পজিটিভ রোগী আনে বিমান।
দেখা যায়, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ দেশি বিদেশি অনেক এয়ারলাইন্সকে বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি হতে হয়। এর মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিয়ে অভিযোগ থেকে নিস্তারের ঘটনাও ঘটে।