সরকারীভাবে ২৩ ডিসেম্বর সারাদেশে একযোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অংশ হিসেবে নাটোরের নারদ নদের তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আজ সোমবার সকাল ১০ টার দিকে শহরের নিচাবাজারস্থ হেমাঙ্গিনী সেতুর কাছ থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাঃ শরিফুন্নেসা, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক গোলাম রাব্বি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম , উচ্ছেদের নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আরডিসি আদনান চৌধুরী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আল আসাদ সহ প্রশাসনের ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এবং পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছেদ অভিযান শুরুতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিযুক্ত শ্রমিকরা হ্যামার দিয়ে চিহ্নিত এলাকা ঠিক রেখে অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে দিতে শুরু করে। এসময় দখলদাররা তাদের স্থাপনা স্ব-উদ্যোগে সরিয়ে নিতে থাকে। এর আগে নদীসমূহের জরিপ কাজ সম্পন্ন করে সীমানা চিহ্নিতকরণ ও অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রনয়ণ করে তাদের অবৈধ স্থাপনা স্বেচ্ছায় সরিয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় জেলা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন এই কাজ সম্পন্ন করছে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারদ নদের নাটোর সদর উপজেলা এলাকা, বড়াল নদীর বড়াইগ্রাম উপজেলা এলাকা এবং নন্দকুজা নদীর গুরুদাসপুর উপজেলা এলাকায় একযোগে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকায় অভিযান চলবে। উচ্ছেদ অভিযানকে সফল করতে নদী রক্ষা কমিটির সভায় প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ণ করা হয়েছে।
নাটোর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আবু আহসান বলেন, জরিপের মাধ্যমে নদীর সীমানা চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের নিয়মিত নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। ঐ নোটিশের প্রেক্ষিতে তারা সাত দিনের মধ্যে তাদের স্থাপনা সরিয়ে না নিলে ‘লোকাল অথরিটি ল্যান্ড এন্ড বিল্ডিংস অর্ডিন্যান্স ১৯৭০’ এর ৭ ধারা অনুযায়ী ফৌজদারী মামলা দায়ের ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহন করা হবে।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, নাটোর জেলাসহ এই অঞ্চলের নদীকে সচল করতে বড়াল বেসিন ভিত্তিক এক হাজার ৩৫ কোটি টাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ণ করা হয়েছে। এরমধ্যে নারদ নদের নাটোর শহরের পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে নদীর বাঁধ, ওয়াকওয়ে, সিটিংপ্লেস, বনায়নসহ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে গেলে নারদসহ নদীগুলো প্রাণ ফিরে পাবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, সিএস নকশা হিসেবে সরকারী জায়গা মুক্ত করা হবে। সেই অভিযান শুরু হয়েছে। পৌর এলাকার চিহ্নিত ১৫ টি স্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এ উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে। ক্রমান্বয়ে জরিপ ও নোটিশ প্রদানের পরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান থাকবে। এই কার্যক্রমে ব্যাপক জনমত তৈরী হওয়ায় অনেকেই স্বেচ্ছায় তাদের বহুতল ভবন ভেঙে ফেলছেন। স্বেচ্ছায় স্থাপনা সরিয়ে নেয়া ইতিবাচক হিসেলড়বে এই কার্যক্রম চলমান থাকতে ও অব্যাহত রাখতে প্রভাব ফেলবে। নারদ নদীতে আজকের এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ফলে হেমাঙ্গিনি ব্রীজ থেকে কানাইখালী জেলাপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন একর নদীর জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত হবে এই কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে অবহিত করেন।