নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের গুরুদাসপুরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কুলসুম বেওয়া নামে এক বৃদ্ধাকে দড়ি দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার পমপাথুরিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কুলসুম একই এলাকার মৃত সুরত আলীর স্ত্রী। বুধবার ঐ বৃদ্ধাকে সিনিয়র জুডিশায়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুন্নাহার রীটার আদালতে হাজির করা হয়। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আদালতের বিচারক কোন আদেশ দেননি।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধা জানান, তার স্বামী অনেক দিন আগে মারা গিয়েছেন। তার চার মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। মেজো মেয়ে রফেলা বিয়ের পর থেকেই তার বাসায় জামাইসহ বসবাস করে আসছে। মঙ্গলবার হঠাৎ অসুস্থ পড়লে তার মেয়ে জামাই আবুল কাশেম ঔষুধ কিনে এনে তার ঘরে প্রবেশ করে। এর পরপরই রতন ও উজ্জ্বল নামে প্রতিবেশী দুই যুবক হইচই করতে থাকে। তারা লোকজন জড়ো করে অপবাদ দেয় বৃদ্ধা তার জামাইয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন। এ কথা বলার পরেই তারা তাকে টেনে হিচরে বাইরে বের করে ডাব গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং তাকে ও তার মেয়ে জামাইকে মারধর করে। পরে পুলিশকে তারাই সংবাদ দেয়। পুলিশ এসে তাকে সহ তার জামাতাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ভিকটিমের দুই মেয়ে রফেলা বেগম ও সফুরা বেগম তাদের বক্তব্যে বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাদের মায়ের জ্বর। তারা বনপাড়ায় ক্লিনিকে থাকায় তার জামাই ঔষধ এনে শ্বাশুড়িকে ডেকে ঔষধ খেতে বলেন। এ সময় তার শ্বাশুড়ি প্রস্্রাব করতে গেলে সেখান থেকেই তাকে ও তার জামাতাকে ধরে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করে পুলিশ ডেকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ভিকটিমের আইনজীবী মোক্তার হোসেন বলেন, কুলসুম বেওয়া ও তার জামাতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা কল্পনা প্রসুত ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই মহিলার বয়স ৮০ বছরের উর্দ্ধে । প্রকৃতপক্ষে এই মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি কিনে নিতে চায়। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন এই অভিযোগ এনেছে।
এ ব্যাপারে জেলা মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি সোহেল রানা বলেন, কেউ অপরাধ করলে সেজন্য কোর্ট আছে, আইন আছে। কিন্তু তাকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা স্পষ্ট মানবাধিকার লংঘন। তারা ভিকটিমের পাশে থাকবেন এবং যা করণীয় তা করবেন।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঐ বৃদ্ধা ও তার মেয়ে জামাইকে আটক করে তাদের সিনিয়র জুডিশায়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুন্নাহার রীটার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।