ডেস্ক নিউজ
২৩ জুন পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার সম্ভাবনা
মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ উন্মুক্ত হবে ডিসেম্বরে
অক্টোবরে চালু হচ্ছে কর্ণফুলী টানেল
অন্যান্য প্রকল্পের অগ্রগতি ৫০ শতাংশের বেশি
রহিম শেখ ॥ করোনা মহামারীর মধ্যেও সরকারের মেগা প্রকল্পে (ফাস্ট ট্র্যাক) কাজের অগ্রগতি বেড়েছে। বর্তমান সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক) ১০ প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ। এই প্রকল্পের ৯৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। মাত্র ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেই পূর্ণতা পাবে স্বপ্নের এ সেতু। চলতি বছর জুনের মধ্যে এই প্রকল্প চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ ও বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৪৩ শতাংশ। বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর মধ্যে উত্তরা-আগারগাঁও পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি ৯০ দশমিক ৪২ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বরে এই অংশে মেট্রোরেল চলাচল করবে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ শতাংশ। আগামী অক্টোবরে চলাচলের জন্য এই টানেল খুলে দিতে চায় সরকার। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্র রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র, দোহাজারী-ঘুমধুম ডুয়েলগেজ ট্র্যাক প্রকল্পের অগ্রগতি বেড়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য মতে, বর্তমান সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পগুলোর মধ্যে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর কাজ ৯৬ দশমিক ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ, মূল সেতুর কাজের আর বাকি মাত্র ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশের কাজ। আর পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের নক্সা জটিলতা কেটেছে। এই প্রকল্পের অগ্রগতি ৪৩ শতাংশ। এছাড়া মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, দোহাজারী-রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেললাইন ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পসহ ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত অন্য মেগা প্রকল্পগুলোতে কাজের গতি ফিরেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, করোনার প্রভাব সারাবিশ্বেই পড়েছে। মহামারী পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে আমরা এগিয়ে চলেছি। জীবন ও জীবিকা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ওমিক্রনে সার্বিক উন্নয়ন কর্মকা-ের গতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছিল। এসব প্রকল্পের কাজের গতি স্বাভাবিক করতে সরকার বেশ আন্তরিক।
পদ্মা বহুমুখী সেতু ॥ আগামী ২৩ জুন পদ্মা সেতু খুলে দিতে শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। গত কয়েক মাসে অগ্রগতি আধা শতাংশ হলেও জানুয়ারিতে হয়েছে দ্বিগুণ। মূল সেতুর অগ্রগতি এখন ৯৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দিতে এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে বিশেষ গতিতে। ছয় দশমিক এক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল পদ্মা সেতুর মোট আটটি ১, ৭, ১৩, ১৯, ২৫, ৩১, ৩৭ ও ৪২ নম্বর খুঁটির মুভমেন্ট জয়েন্টগুলো বসানোর পর চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে। এদিকে চীন থেকে আসা সেতুর বাকি সব ল্যা¤প পোস্টের চালান সেতু এলাকায় পৌঁছেছে। চলছে ব্রিজিং ফেসিলিটিজ,ওয়ে স্টেশন ও ওভারলোড স্টেক ইয়ার্ডসহ শেষ পর্যায়ের কর্মযজ্ঞ। পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো সফিকুল ইসলাম জানান, সেতুটি যথাসময়ে চালু করতে কাজ এগুচ্ছে ধাপে ধাপে। সেতুতে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন অগ্রগতি ৮৯ দশমিক দুই চার শতাংশ। আর ৪০০ কেভি টিএল প্ল্যাটফর্ম কাজ শেষ হয়েছে ৭০ ভাগ। নদী শাসন, পরিবেশ ও দুই পাড়ের এ্যাপ্রোচসহ আট কাজ নিয়ে সেতুর সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯০ শতাংশ। তবে মূল সেতুর অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। নদী শাসনের কাজের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। আর সেতুর সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯০ শতাংশ।
পদ্মা সেতু রেল লিংক ॥ পদ্মা সেতুর বুক চিরে চলে যাবে ট্রেন। সেজন্য আলাদাভাবে তৈরি করা হচ্ছে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প। বর্তমানে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল লিঙ্ক প্রকল্পে রেল স্টেশন, ভায়াডাক্ট, রেল সেতু ও রেল লাইনের কাজ চলছে পুরোদমে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে রাজধানীর রেল সুবিধা দ্রুত সংযুক্ত করতে ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের কাজে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ৩৯ দশমিক ছয় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই অংশে এখন হরদম চলছে কাজ। চীনা ঠিকাদার সিআরইসি রেললাইন, রেল স্টেশন ও রেল সেতু নির্মাণ করছে সেনাবাহিনীর সিএসির তত্ত্বাবধানে। এই অংশের পলাশপুর এলাকায় শুরু হয়েছে পাথরবিহীন রেললাইন বসানোর কাজ। ক্রেনে করে ভায়াডাক্টের ওপর লোহার রেললাইন তোলা হচ্ছে। লোহার গেজবাফল, ইলাস্টিক ক্লিপ, ফাইবারের ইন্সুলেটার ও ফাসনার কানেক্টর দিয়ে আটকে দেয়া হচ্ছে স্লিপারের সঙ্গে। ঢাকা থেকে যশোর ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্প শেষ হবে ২০২৪ সালে। আর পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেললাইন চালুর কথা রয়েছে চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর।
মেট্রোরেল ॥ গত জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৯০ দশমিক ৪২ শতাংশ। উত্তরা-আগারগাঁও অংশ চলতি বছরের ডিসেম্বরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে বলে আশা করছে মেট্রোরেল নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। উত্তরা-আগারগাঁও অংশে ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল, মেকানিক্যাল সিস্টেম, রোলিং স্টক (রেলকোচ) এবং ডিপো ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৭৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের প্রাথমিক কার্যক্রম চলছে। ২০১২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরে পাস হয় ঢাকার প্রথম মেট্রো নির্মাণ প্রকল্প। বাংলাদেশী টাকায় নির্মাণ ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে টাকার বিপরীতে ডলারের মান অনুযায়ী এই ব্যয় ছিল ২৮০ কোটি ডলার। পরের ছয় বছরে টাকার বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে ডলারের মান। ২০১৯ সালের হিসাবে মেট্রোটির নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ৩০৯ কোটি ডলার। প্রতি কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলারে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে লাইনটির কিলোমিটারপ্রতি নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ঢাকা মেট্রো রেল সরকারের ৮টি অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পের মধ্যে একটি। এর মধ্যে পদ্মা সেতুতে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী পদ্মা সেতুর চেয়ে মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে তিন হাজার কোটি টাকা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র ॥ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পাবনার রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে রাশিয়ার এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করে সরকার। চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল ধরা হয়েছে সাত বছর। বিদ্যুত কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালের অক্টোবরে উৎপাদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটি ৬০ বছর ধরে বিদ্যুত উৎপাদন করবে। এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে পাবনার রূপপুওে; যেখানে দুটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হবে। প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৪০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এরই মধ্যে প্রকল্পের আওতায় মোট ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
কর্ণফুলী টানেল ॥ বাস্তবায়নের পথে চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প। নদীর তলদেশ দিয়ে চার লেন বিশিষ্ট ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের দুটি টিউবের খননকাজ শেষ। চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে প্রকল্প শেষের আশা কর্তৃপক্ষের। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটিই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত সুড়ঙ্গ পথ। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়ার ২ বছর পর এর কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। তিনি জানান, মহামারীর কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজ বিঘিœত হয়েছে। তিনি বলেন, তবে আমরা পারব কিনা (সময়মতো প্রকল্পের কাজ শেষ করতে), তা এ মুহূর্তে বলা সহজ নয়।
মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্র ॥ দেশী-বিদেশী বিপুল বিনিয়োগের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠছে কক্সবাজারের মাতারবাড়ি। এরই মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে এ এলাকায়। ৭৮ হাজার কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয়ের আরও ছয়টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলমান। এর বাইরে আরও ৫৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে মাতারবাড়ি ও এর সংলগ্ন মহেশখালী এবং ধলঘাটে। জাপানের অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকা ঘিরে লজিস্টিক, বিদ্যুত ও জ্বালানি এবং অন্যান্য শিল্পে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রাথমিক প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার সরাসরি বিনিয়োগ করবেন সে দেশের বেসরকারী উদ্যোক্তারা। বাকি ১০ বিলিয়ন ডলার সহজশর্তে বাংলাদেশকে ঋণ দেবে জাপান। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আট হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নেভিগেশন চ্যানেল টার্নিং বেসিন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। চলতি বছরই এর বাস্তবায়ন শেষ হওয়ার কথা। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ১০৯ কোটি টাকা। আট হাজার ৮২১ কোটি টাকা ব্যয়ে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ের রাজঘাট-মোহরীঘোনা-নিউ খোয়েলা সেতু পর্যন্ত মাতারবাড়িী বিদ্যুত প্রকল্পের সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। আগামী বছরের জুন নাগাদ এ সড়ক চালু হওয়ার কথা রয়েছে। আর ৫১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার পাওয়ারপ্লান্ট’র ভৌত কাজ হয়েছে ৫২ শতাংশ। ১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার দুটি বিদ্যুত কেন্দ্র ২০২৬ সালে চালু করা যাবে বলে আশা করছে সরকার। মাতারবাড়ি-মধুনাঘাট ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরং উইথ ডবল পাইপলাইন প্রকল্পের ৬৯ শতাংশ ভৌত কাজ হয়েছে।
দোহাজারী-ঘুমধুম ডুয়েলগেজ ট্র্যাক ॥ ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু, কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ চলছে। এই মেগা প্রকল্পের দোহাজারী থেকে রামু, কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার অংশের কাজ হয়েছে ৬৫ শতাংশ। কক্সবাজার থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার অংশের কাজ মিয়ানমারের অনুমতি না পাওয়ায় শুরুই হয়নি। ২০২৩ সালে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ চালু হতে পারে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ॥ নতুন বছরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে বনানী অংশ চালু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ১০ বছর আগে শুরু হওয়া প্রকল্পের অধীনে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে চিটাগং রোড পর্যন্ত উড়ালপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। আরও পাঁচ বছর আগেই চালু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। তবে ২০২১ সালে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। নতুন বছরে সড়কের আরেক বড় প্রকল্প সোয়া ছয় হাজার কোটি টাকার জয়দেবপুর-চন্দ্রা-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হবে। এই মহাসড়কের দু’পাশে থাকছে পৃথক সার্ভিস লেন। তাই একে দেশের দ্বিতীয় এক্সপ্রেসওয়ে বলা হচ্ছে। ১৭ হাজার কোটি টাকায় নতুন বছরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দুই পাশে সার্ভিস লেন রেখে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হবে।