ডেস্ক নিউজ
নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে একথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, “বর্তমানে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আরও বেশ কটি হাসপাতালকে করোনার জন্য প্রস্তুত করা প্রয়োজন। আমাদের বেশ কয়েকটি হাসপাতালের চিন্তাভাবনা রয়েছে।
“যার মধ্যে হয়ত আগামীতে মুগদার (মুগদা জেনারেল হাসপাতাল) কথা চিন্তা করব, আমরা নিটোরের (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান) কথা চিন্তা করব এবং আরও বেশ কয়টি হাসপাতালকে আমরা করোনার জন্য নিয়ে আসব।”
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০ জন। আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮২ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য তৈরি করছে।
জাহিদ মালেক জানান, বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার ২ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। মহাখালীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মার্কেটকে ১৩০০ শয্যায়, উত্তরার দিয়াবাড়ির ৪টি ভবনকে ১২০০ শয্যায় উন্নীত করছি।
রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ফুলবাড়িয়া এলাকার রেলওয়ে হাসপাতাল ও নয়াবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতালও কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।
রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস-বিআইটিএডিতেও করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য সারা দেশে ৭ হাজার ৬৯৩টি আইসোলেশন শয্যা এবং ১১২টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তত রাখা রয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন।
এদিকে করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে সন্ধ্যা ৬টা পর ফার্মেসি বাদে অন্য সব দোকানপাটের সঙ্গে সুপারশপগুলোও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
লকডাউন কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা ইউরোপ, আমেরিকার দিকে তাকান, কী ভয়াবহ চিত্র সেখানে বিরাজ করছে। যদি লকডাউন ভালোমতো কার্যকরী হয়, তাহলে পরে সংক্রমণ কমবে।
“২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছে, আমরা আশা করব, এ কটা দিন কষ্ট করে আমরা বাড়িতে থাকি। কষ্ট করলে আমরা তাড়াতাড়ি করোনার বিরুদ্ধে জয়লাভ করতে পারব।
“আমাদের প্রশাসন, আর্মি, পুলিশ, নেতৃবৃন্দ সকলে কষ্ট করছে। আরেকটু কষ্ট করতে হবে, আগামী কয়েক দিন ২৫ তারিখ পর্যন্ত, যাতে কিনা আমাদের লকডাউনটি কার্যকরী হয়।”
যেসব স্থান থেকে রোগ ছড়াচ্ছে, সেসব এলাকা থেকে লকডাউনের মধ্যেও মানুষ বেরিয়ে যাচ্ছে বলে খবর এসেছে।
এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “করোনাভাইরাস বেশ কয়েকটি জায়গায় বিস্তার লাভ করেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারায়ণগঞ্জ, মিরপুর এবং বাসাবো। আমাদের অন্যান্য জেলাতেও করোনা ছড়িয়ে গেছে।
“আমার লক্ষ্য করেছি, নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে বেশকিছু লোক অন্যান্য জেলাতে চলে গিয়েছে, সেখানে আক্রান্ত করেছে। এ বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ বিষয়টিকে আমাদের আরও কঠিনভাবে দেখতে হবে এবং এটা বন্ধ করতে হবে।”