নাটোরের নলডাঙ্গায় জমি আছে ঘর নাই আশ্রায়ন প্রকল্প-২ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া শয়ন ঘর এখন ধান চালের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের পাটুল পশ্চিমপাড়া গ্রামের এন্তাজ আলীকে দেওয়া সরকারী ঘরটি ভেঙ্গে সেখানে ইটের দালান ঘর নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরটি অন্যত্র তৈরি করে এখন গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছে। ঘটনাটি জানার পর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়,বিগত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে মোট ৪০৮ টি পরিবার জমি আছে ঘর নাই এমন দরিদ্ররা এ প্রকল্পের ঘর পায়। এর মধ্যে ৪ নং পিপরুল ইউনিয়নে মোট ৮০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে এ ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করে দরিদ্র এসব পরিবারে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পিপরুল ইউনিয়নে ৪ নং ওয়ার্ডের পাটুল পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক এন্তাজ আলী এ প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্দ পায়। এক বছরের মাথায় কৃষক এন্তাজ আলীর পারিবারিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসলে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিনের ঘর ভেঙ্গে সেখানে ইটের দালান বাড়ি ঘর নির্মাণ করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে কৃষক এন্তাজ আলী তড়িঘরি করে অন্যত্র সরকারী এ ঘর নির্মাণ করে সেখানে ধান চালের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছে।
কৃষক এন্তাজ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সরকারী বরাদ্দ পাওয়া এ ঘর দেওয়ার সময় তার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলো না। পরে তার ছেলের চাকুরীর সুবাদে তার পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। এরপর সে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা খরচ করে সরকারী ঘরটি ভেঙ্গে সেখানে ইটের দালান বাড়িঘর নির্মাণ করেন। সরকারী এ ঘরটি পূণরায় বাড়ির অন্যত্র তৈরি করে সেখানে গোডাউন ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এ বিষয়ে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাকিব-আল-রাব্বিকে জানিয়েছিলেন। জানানোর পর ইউএনও সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত করে এবং কৃষক এন্তাজ আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্ত ওই ওর্য়াডের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিনকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া কথা বললেও এখনো তিনি কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সরকারের নির্দেশের বাহিরে কোন কেউ না।
আশ্রায়ণ প্রকল্প-২, প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মাহবুব হোসেন মুঠোফোনে জানান, আশ্রায়ণ প্রকল্পের সরকারী বরাদ্দে নির্মাণকৃত ঘর ভাঙ্গা ও স্থানান্তরের কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ এ ধরনের কোন কাজ করে থাকে তাহলে তদন্তু করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক ও ইউএনও কে নির্দেশ দেয়া হবে।