নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে কলেজ শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলায় ৪ কলেজ শিক্ষার্থীকে ১০ বছর করে শিশু সংশোধনাগারে আটকাদেশ দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দেন। আটকাদেশ প্রাপ্তরা হল লালপুর উপজেলার দাংগাপাড়া গ্রামের মহরম আলীর ছেলে তুষার আলী, পুকুরপাড়া গ্রামের আন্তাজ আলী ওরফে এন্তাজের মেয়ে মোছাঃ মেঘলা খাতুন, নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব মাধনগর গ্রামের সালাম পিয়নের ছেলে তুষার ইমরান ও রাজশাহীর বাগমারার শ্রীবতীপাড়ার ওবাইদুর রহমানের ছেলে ইমন হোসেন। ধর্ষিতাসহ তারা সবাই বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর স্যাপার কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, তুষার আলী, মোছাঃ মেঘলা খাতুন, ইমন হোসেন ও তুষার ইমরান এই চারজন দয়ারামপুর স্যাপার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এরা প্রত্যেকেই বাগাতিপাড়ার বিভিন্ন মেসে থেকে কলেজে যাতায়াত করত। ভিকটিম তার মায়ের সাথে একই উপজেলার মিশ্রিপাড়া এলাকায় এক ভাড়া বাড়িতে থেকে কলেজে যাতায়াত করত। এরই এক পর্যায়ে ভিকটিমের সাথে তার সহপাঠি মোছাঃ মেঘলা খাতুনের পরিচয় হয়। তুষার আলী বিভিন্ন সময় ভিকটিমকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে ভিকটিম তা’ প্রত্যখ্যান করে। পরে ২০১৭ সালের ১২ জুলাই তুষার তার অন্যান্য অভিযুক্তদের সাথে যোগসাজশে ভিকটিমকে পানির সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে পান করায়। পরে তারা কলেজের গেট থেকে অপহরণ করে এক অজ্ঞাত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং মেঘলা তার স্থির চিত্র ধারণ করে। ভিকটিমের নেশার ঘোর কেটে গেলে তার পড়নে কাপড় চোপর না দেখতে পেয়ে কাাঁদাকাটি করতে থাকে। এ সময় অভিযুক্তরা ভিকটিমের ছোট ভাইকে অপহরণের ভয় দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ভয়ে ভিকটিম এ ঘটনা তার মাকে জানতে দেয়নি। পরে সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতলে চিকিৎসা নিতে গেলে চিকিৎসকরা তার মাকে জানায় যে, ভিকটিমের যৌনাঙ্গ থেকে অধিক রক্ত ক্ষরণের ফলে তার এ অবস্থা হয়েছে। এ সময় ভিকটিম তার মাকে সব বিষয় খুলে বলে। বিষয়টি জানার পর ২০১৮ সালের ২৩ আগষ্ট ভিকটিমের মা রশিদা পারভীন বাদী হয়ে বাগাতিপাড়া থানায় তুষার আলী, মোছাঃ মেঘলা খাতুন, ইমন হোসেন ও তুষার ইমরানকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ বছর মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে আদালতের বিচারক উল্লেখিত রায় প্রদান করেন। এ সময় অভিযুক্তরা সকলেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সময় তাদের প্রাপ্ত বয়স না হওয়ায় এই রায় প্রদান করা হয়।