নাটোর প্রতিনিধি:
‘বাল্য বিয়েকে না, বলেছি ও বলবো’-উল্লেখ করে দৃপ্ত শপথ নিয়েছে নাটোরের সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার হরিশপুর শের-ই-বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের (ডিপিএফ) উদ্যোগে এই শপথ গ্রহণ ও বাল্য বিবাহকে না বলি অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, বাল্য বিবাহ শারিরিক ও মানসিক বিকাশের প্রতিবন্ধক। তাই এই বিয়েতে শুধু পরিবারই নয় ক্ষতিগ্রস্থ হয় সমাজ ও রাস্ট্র। আর্থিক সংকটের কারণে যদি কোন অভিভাবক মেয়েদের লেখা-পড়া চালাতে না পারে বা ভরণ পোষণ চালাতে না পারে তাহলে সম্ভাব্য বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে সেই শিক্ষার্থীর লেখাপড়া চলাকালীন সকল দায়িত্ব নেবে জেলা প্রশাসন। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ডিপিএফ সহ যে কোন সংগঠন বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতামুলক যে কোন কার্যক্রম হাতে নিলে জেলা প্রশাসের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা আশ্বাস দেন তিনি। শপথ গ্রহণ করানোর পরে ডিপিএফ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বাল্য বিবাহকে না বলি অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল, প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই পাঠানসহ সচেতন ব্যক্তিবর্গ। পরে বিদ্যালয়ের উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বাল্য বিবাহকে লাল কার্ড প্রদর্শন করে।
শিক্ষাথী (ছাত্রী) মাইসা , তৃষা সুলতানাসহ অন্যান্যরা জানায়, বাল্য বিবাহ সমাজের একটি ব্যাধ্ ি। বাল্য বিাহের কারণে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে তারা বলে, অনেক সময় ইভ টিজিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে অভিভাবকরা মেয়েদের বাল্য বিবাহ দিতে বাধ্য হন। আবার আর্থিক অনটনের কারণেও তারা মেয়েদের বিবাহ দিয়ে দেন। এর ফলে তাদের নানা সমস্যায় ভুগতে হয়। মেয়েরা অনেক কিছু করতে চায়। কিন্তু বাল্য বিবাহের কারণে তারা কিছু করতে পারে না। তাদের দাবী অন্তঃত এসএসসি পাশের পর এবং বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত যেন তাদের বিয়ে না দেন। লাভলী বেগম, সেতুসহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বাল্য বিবাহ দেওয়া ঠিক নয় বলে শিকার করে জানান, অভিভাবকরা মেয়েদের বাল্য বিবাহ দিতে বাধ্য হন। কারণ মেয়ে যদি সুন্দরী হয় তখন বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে বখাটেদের ইভ টিজিংয়ের শিকার হতে হয়। তাছাড়া আর্থিক অনটনের কারণে এবং সামাজিক নানা সমস্যার কারণেও তারা মেয়েদের বাল্য বিবাহ দিতে বাধ্য হন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, তারা সব সময় বাল্য বিবাহ যাতে না হয় সেজন্য শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে তাদের অজান্তে অনেক সময় অভিভাবকরা বাল্য বিবাহ দিয়ে দেয়। কারণ ইভ টিজিং ও আর্থিক অনটনের কারনে তারা এই কাজ করেন। তারা জানতে পারলে সেই অভিভাবককে ডেকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এ ছাড়া তাদের লেখাপড়ার বিষয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হয়।