নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পুকুরের পানি থেকে আড়াই মাসের শিশু কন্যার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ওই শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন শিশুটির বাবা। মামলায় সন্তানকে হত্যার পর পুকুরের পানিতে মরদেহটি ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। মরদেহটি উদ্ধারের তিনদিন পর সোমবার রাতে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন শিশুর বাবা আব্দুর রহমান তুষার। মঙ্গলবার শিশুর মা তারাবী ইয়াসমিন তারিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানায়, পুকুরের পানিতে শিশুর ভাসমান মরদেহের খবর পেয়ে শনিবার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরদিন রোববার নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে শিশুটির বাবা আব্দুর রহমান তুষারের হাতে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এদিকে মাত্র তিন মাসের অবুঝ শিশুর মরদেহ পুকুরের পানিতে পাওয়ায় সন্দেহ থেকে ঘটনার দিন শনিবার থেকে শিশুটির মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সোমবার রাতে মামলাটি দায়েরের পর শিশুটির মাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলায় আব্দুর রহমান তুষার অভিযোগ করেন, মাত্র ১৫ মাস পূর্বে তারাবী ইয়াসমিন তারিনের সাথে তার বিয়ে হয়। স্ত্রীর ইচ্ছায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সন্তান নেন তারা। সন্তানকে ঘিরে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই মনোমালিন্য হতো। ঘটনার দিন শনিবার সকালে স্ত্রী-সন্তানকে শ্বশুর বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগরের বজরাপুরে রেখে তুষার নিজের বাড়িতে চলে যান। তুষারের বাড়ি রাজশাহীর বেলপুকুরের জামিরা গ্রামে। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ীর পাশের একটি পুকুরের পানি থেকে ভাসমান অবস্থায় তার প্রায় তিন মাস বয়সের মেয়ে তানজিমা আক্তার টিয়া’র মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি আরো অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী তারাবী ইয়াসমিন তারিন নিজের শিশু কন্যাকে হত্যারর পর মরদেহ পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বজরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম টেনুর পালিত কন্যা তারাবী ইয়াসমিন তারিন। তার প্রকৃত বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক তাজুল ইসলাম তারিনকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেন। এছাড়াও তুষারের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, মামলার বাদি শিশুটির বাবা তুষার একজনকে আসামী করেছেন। মামলার পর অভিযুক্ত তারাবী ইয়াসমিন তারিনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদে কোন গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে তিনি তা প্রকাশ করতে রাজি হননি।