নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের লালপুরে থানা হেফাজতে আসামিদের নির্যাতনের অভিযোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসি এবং দুই এসআইসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য পুলিশ সুপারকে এই আদেশ দেন লালপুর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দীন। সেই সাথে আগামি ১৫ জুলাই তারিখের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও পুলিশ সুপারকে আদেশ দেন আদালত।
মামলা সুত্রে জানা যায়, গত বুধবার লালপুর থানা পুলিশ একটি অটোরিক্সা ছিনতাই মামলায় সোহাগ হোসেন, শামীম মোল্লা, সালাম এবং রাকিবুল ইসলাম নামে চার আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। আদালতের কাছে জবানবন্দীতে আসামীরা অভিযোগ করেন যে, বড়াইগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিব, লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ উজ্জল হোসেন, উপপরিদর্শক জাহিদ হাসান, উপপরিদর্শক ওমর ফারুক শিমুল এবং অপর এক কন্সটেবল তাদেরকে নির্যাতন করেন। জবানবন্দীতে আসামীরা বলেন, গত ৯ জুলাই রাতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে হাত,পা ও চোখ বেঁধে মারধর শুরু করেন। এ সময় পুলিশেরা পায়ের তালুতে লাঠি দিয়ে পিটান এবং অন্ডকোশে লাথি দেন। থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে গাড়ীতে তোলার সময় এবং গাড়ীতে তুলেও তাদের প্রচন্ড মারধর করে পুলিশ। তাদের আদালতে পাঠানোর আগে বলে যে, যদি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকার না করি তাহলে ওখান থেকে তাকে রিমান্ডে নিবে। তারপর এমন মামলা দিবে যাতে করে সে আর কোন দিন বউ বাচ্চার মুখ দেখতে না পারে। আর কোন দিন জামিন হলেও জেলগেট থেকে তুলে নিয়ে যাবে।
আসামীদের বক্তব্য ও শরীরে দৃশ্যমান আঘাত পর্যালোচনা করে থানা হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হওয়া আসামীদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দীন। পরে নাটোরের পুলিশ সুপারকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে তদন্তের ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, অটোরিক্সা ছিনতাই মামলার আসামীদের ধরতে গেলে তারা দৌড় দিয়ে পড়ে গিয়ে দাগটাগ হয়েছে। পরে আদালতে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। আদালতের আদেশের কথা শুনেছি। আদেশের কপি পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।